Site icon Shaili Tv

অনুমতি নিয়েও স্বর্ণ আমদানিতে ব্যবসায়ীদের ‘না’

বৈধপথে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা জারি করে লাইসেন্স দেওয়া হলেও কোনো ব্যবসায়ী স্বর্ণ আমদানি করেননি। ভ্যাট-ট্যাক্স-শুল্ক দিয়ে আমদানি করতে গেলে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় গত এক মাসে স্বর্ণ আমদানি হয়নি। চোরাচালান প্রতিরোধ, সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এক বছর আগে বৈধপথে স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই নীতিমালার আলোকে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি চেয়ে ৪৭টি প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদনও করেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে গেলো বছরের ১ ডিসেম্বর ১টি ব্যাংক ও ১৭টি জুয়েলার্সকে স্বর্ণ আমদানির অনুমতি দেয়। বাতিল করা হয় ২৯টি আবেদন। যেসব প্রতিষ্ঠান আমদানির অনুমোদন পেয়েছে তাদের কেউই একমাস পার হয়ে গেলেও স্বর্ণ আমদানি শুরু করেনি। জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নীতিমালায় ৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর ধার্য করা থাকলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে এখন তা দেখানো হচ্ছে ১৫ শতাংশ। তার সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ৫ শতাংশ ট্রেড ভ্যাট। আর প্রতি ভরিতে আমদানি শুল্ক ২ হাজার টাকা রয়েছে অপরিবর্তিত। এই ভ্যাট-ট্যাঙ ও শুল্ক দিয়ে স্বর্ণ আমদানি করলে বাজারে স্বর্ণের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেড়ে যাবে। খবর বাংলানিউজের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সভাপতি এনামুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের বাজারে যে স্বর্ণ পাওয়া যাচ্ছে তা আর্ন্তজাতিক মানের। তাতে দাম বেশি থাকে মাত্র দুই হাজার টাকা। আমদানি করতে গেলে দাম বাড়বে কম করে হলেও ১২ হাজার টাকা। কারণ ১৫ শতাংশ ভ্যাট ৭ হাজার ৫শ টাকা, ৫ শতাংশ এআইটি ২ হাজার ৫শ টাকা ও ২ হাজার টাকা শুল্ক। মোট ১২ হাজার টাকা। বেশি থাকা দামের ২ হাজার টাকা বাদ দিলেও গড়ে ১০ হাজার টাকা দাম বাড়বে।’
বাজুস সভাপতি বলেন, ‘কিন্তু কীভাবে কখন ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর পরিবর্তন করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে তার কিছুই জানেন না ব্যবসায়ীরা। আমদানি শুল্কের এই হার কার্যকর থাকলে দেশে কোনোদিনই স্বর্ণ আমদানি হবে না।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গেলো বছরের ১১ মার্চ দরখাস্ত আহ্বান করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন জমা নেয়া হয়। যাচাই-বাছাই শেষে একটি ব্যাংকসহ ১৮ প্রতিষ্ঠানকে দুই বছরের জন্য ডিলার লাইসেন্স দেওয়া হয়। তবে স্বর্ণ আমদানির প্রতিপদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বাজারে ছোট বড় ১৫ হাজার ব্যবসায়ী স্বর্ণ কেনাবেচা করেন। বার্ষিক চাহিদা রয়েছে প্রায় ২০ মেট্রিক টন স্বর্ণের। যার প্রায় পুরোটাই আসে চোরাচালানের মাধ্যমে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সামপ্রতি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আটক ও উদ্ধার করেছে কাস্টম ও শুল্ক গোয়েন্দা। সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত বছর স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা জারি করে সরকার।

Exit mobile version