সবুজ পৃথিবীর পাসপোর্ট হাতে, ধরিত্রির বুকে
কত সুখে ফুটেছি মায়ের কোলে শিশুচাঁদ হয়ে
আমার তুলতুল পা পদ্মরাগ পথে
তোমরা কাঁটাতার ভিসার এঁকেছো সীমানা।

পত্রালয়ে নানা রং-ফুল আমোদে উচ্ছ্বসিত দোলে
পাখি-সব কলরব ওড়ে ডানামেলা স্বাধীনতায়
কলকল নদীস্রোত ছোটে তালে খুশির হাওয়ায়
আকাশে নীলমেঘে জ্বলে আলোক সূর্য-লন্ঠন
রুপোলি জ্যোৎস্নায় ভরে দশদিক মায়া-বসুন্ধরা
কেবল আমাকে তোমরা ক্ষুদ্র তুচ্ছ করে দিলে।

কতবার মেরেছো প্রাণে
ভ্রুণ হত্যাযজ্ঞে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়
অপরিণত শরীরে দাসশ্রমে
আমি বেড়ে উঠেছি ক্ষুধার রাজ্যে গদ্যময়
বেড়ে উঠেছি মৃত্যুদূতের রক্তচক্ষু দেখে প্রতিক্ষণ
তোমাদের পাশার পণ বেড়ে উঠেছি
নির্যাতনের সকল দলিলের মুদ্রণে।

তোমরা শুধু দেয়াল তুলেছো আমার জন্য
আমার নিষ্পাপ চোখে দেখালে কদর্যতা
আমার শ্রবণে ঢেলেছো কু-কথা, ঘ্রাণে মাদকতা
জিভে মেশালে বিষ
অপাপবিদ্ধ শরীরে মাতাল স্পর্শ ।

বড় হতে হতে আমার সকল স্বপ্ন-সুন্দর খসে পড়ে
কতো প্রতিযোগিতার উটের পিঠে বসিয়ে
রোগ-শোক হিংসা হানাহানির দুনিয়া বানিয়ে
গোবরে দিয়েছো লেপ্টে সমগ্র মনুষ্য জীবন
অথচ তোমরা পারতে নিমেষেই পারতে
রুপকথা, প্রজাপতির ছন্দ-নৃত্যে
রংধনু রঙে আমাকে রাঙাতে।

তোমাদের মাথায় কেন এতো পোকা
সারাক্ষণ কিলবিল করে?
‘মানব শিশু’ না ভেবে, সাদা-কালো মুর্তির
‘ধর্ম- শিশু’র কয়েদি পোশাক পতাকায় জড়িয়ে
বিভক্ত হরফে ফেলে আমাকে
কোন শ্রেণিতে এক নম্বর হতে চাও
বুড়োরা- উদগ্র বাসনায়?

আমি শিশু বেশে পৃথিবীতে এসেছি
কখন ফিরিয়ে দেবে আমাদের পৃথিবী!