Site icon Shaili Tv

ইভিএম নিয়ে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া যখন এতদিন হয়নি আর হবে না। আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি আছে। এ সময়েও কোন ধরনের ধাক্কাধাক্কি হবে না। যা আপনাদের কারণেই হবে না। এ নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এক সাথে কথা বলছেন প্রার্থীরা। সেখানে এত সংঘাত ও অস্বস্তিমূলক পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না, তা আমি প্রত্যাশা করতেই পারি।
গতকাল চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তব্যকালে প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে আইনশৃঙ্খলা সভা ও বিকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সাথেও সভা করেন সিইসি।
প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, নিস্প্রয়োজনে কাউকে কিছু করা হবে না। একাধিক ইউনিয়নের একের অধিক ক্যাম্প থাকতে পারবে না। মামলা করা হবে, এমন উড়ো কথাও বলা উচিত না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দেয়া আছে, কারো প্রতি দুর্বলতা না দেখিয়ে কাজ করতে হবে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের বলেছি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মতাদর্শের হতে পারেন কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার পর এসব ভুলে যেতে হবে।
সিইসি বলেন, মন্ত্রী, এমপিদের বিষয়ে বিধিমালায় বলা আছে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। আইন আমাদের মানতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে এ আইন আমি পছন্দ করি না। আজকে যদি সংসদে অধিক সংখ্যক বিরোধীদলের সাংসদ থাকতেন, তাহলে এ আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব করতাম। এ আইন করা হয়েছিল যখন দলীয়ভাবে নির্বাচন ছিল না তখন। তবে এখন আইন অমান্য করার সুযোগ নেই। আইন মানতে হবে। পৌরসভার মেয়র প্রচারণায় থাকলেও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থাকতে পারবেন না।
ইভিএম নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ ভোট প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে থাকে বলে গুজব রটানো হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। কোথাও এ বিষয়টি ছিল না। আইনেও নেই, বিধিতেও নেই। এক পার্সেন্টও হয় না। অনেক অভিযোগ আসে যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই, তারপরও আমাদের এসব অভিযোগ শুনতে হয়। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, আপনারা বিধিটা দেখেন, সেখানে এরকম কিছু লেখা নেই।’
আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি কোন দিন অপ-রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না। আমি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন করতেই প্রার্থী হয়েছি। আমি থাকতে যাতে কোন মায়ের বুক খালী না হয়, সেদিকে সতর্ক আছি। আমার হাতে রক্তের দাগ নেই। এখানে সবাই যারা যার মতো করে নির্বাচন করছে। আমার দুঃখ হচ্ছে প্রথম থেকেই প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছে। আমাদের চসিক মেয়র নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। অথচ বিএনপির বোয়ালখালীর মেয়র নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও কোনরূপ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। খামাখা অভিযোগ করা উচিত নয়। কেউ যদি ঝামেলা করে সুবিধা নিতে চায় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। কোন মায়ের বুক খালী হলে আমি যদি নির্বাচিতও হই, তাহলে আমার কষ্ট থেকে যাবে।
বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, শহরে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে সহাবস্থান থাকলেও বোয়ালখালীতে সমস্যা আছে। সেখানে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আজকেও দুটি চিঠি দিয়েছি। নৌকা প্রার্থীর একেকটি ইউনিয়নে ৮-৯টি অফিস আছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে ব্যবস্থা নিবেন। এখন এলার্মিং হচ্ছে আপনি বিমানে উঠার পর মামলা হবে বলে আভাস মিলছে। আপনি যাওয়ার পরে বোয়ালখালীতে যারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। ভোটার ও এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনার বারবার আসায় পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে।’
বিএনএফ প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় হবে। ভোটাররা পরিবর্তন চায়। নেতৃত্বের পরিবর্তন চায়। আস্থার সংকট আছে। এ সময়ে চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনে আস্থার সংকট উত্তোরণের সময় এসেছে।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেয়া সকলের নাগরিক দায়িত্ব। বিভিন্ন দল অংশ নিচ্ছে। এ নির্বাচনকে দেখতে চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। অন্য নির্বাচনে যে আস্থার ভিন্নতা হয়েছে এগুলো এ নির্বাচনে দূর হবে বলে আশা রাখি।
এসময় নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান ও শফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version