Site icon Shaili Tv

করোনা টিকা : আগামী শীতে জীবন স্বাভাবিক হওয়ার আশা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ফাইজার এবং বায়োএনটেকের টিকা গ্রীষ্মে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রভাব ফেলতে শুরু করবে এবং আগামী শীত নাগাদ বিশ্বে জনজীবন আবার স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক উগুর শাহিন। বায়োএনটেকের এই সহপ্রতিষ্ঠাতা বলেন, বিশ্ব জুড়ে যত মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তার তুলনায় টিকা এখনও অপ্রতুল। তাই আসন্ন শীতে টিকা খুব বড় প্রভাব রাখতে পারবে না বিধায় বিশ্বকে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়েই যেতে হবে। জার্মানির জৈব প্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার মিলে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় একটি টিকা প্রস্তুত করছে। খবর ওয়েবসাইটের।
গত সপ্তাহে এই দুই কোম্পানি জানায়, তাদের তৃতীয় ধাপের প্রাথমিক পরীক্ষায় এই টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ৯০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। নানা দেশের প্রায় ৪৩ হাজার মানুষ ওই পরীক্ষায় অংশ নেয়।
ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার দুই ডোজ তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দিতে হয়। বয়স্ক ব্যক্তি, চিকিৎসাকর্মী ও স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই টিকা দেওয়া হবে। তারপর পর্যাক্রমে বয়স ধরে টিকা দেওয়া হবে।
বিবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক শাহিন বলেন, তাদের টিকা মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ হ্রাস করবে বলেই তার বিশ্বাস। এছাড়া, টিকা গ্রহণের পর কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলেও শরীরে খুব বেশি উপসর্গ দেখা দেবে না।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের টিকা নিয়ে আমি দারুণ আশাবাদী। এটা অত্যন্ত কার্যকর এবং মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম। হয়ত সংক্রমণ হ্রাসের হার ৯০ শতাংশ হবে না, কিন্তু ৫০ শতাংশ হবে।
“আর যদি তাই হয়, তবে সেটাও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে যদি মহামারীর বিস্তারের গতি অর্ধেকও কমিয়ে আনা যায় সেটাও নাটকীয় ফল দেবে।”
ফাইজার ও বায়োএনটেকের হাত ধরে বিশ্ব প্রথমবারের মত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর একটি টিকা হাতে পাওয়ার আশা করছে।
তাদের ঘোষণার পর গত সোমবার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের অধ্যাপক জন বেল বলেন, ‘‘হয়ত এ বসন্তেই মানুষ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।
“সম্ভবত আমিই প্রথম ব্যক্তি যিনি টিকা নিয়ে এতটা আশাবাদী হয়ে উঠেছি। কিন্তু আমি এটা যথেষ্ট আস্থার সঙ্গেই বলছি।”
বায়োএনটেকের অধ্যাপক শাহিন অবশ্য বসন্তে সব ঠিক হওয়ার আশা দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘যদি সব কিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে এ বছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে টিকা সরবরাহ করা শুরু হবে।
“আমাদের লক্ষ্য আগামী এপ্রিলের মধ্যে সারা বিশ্বে ৩০ কোটি ডোজের বেশি টিকা ডেলিভারি দেওয়া। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই হয়ত মহামারী নির্মূলে কাজ শুরুর মত পরিস্থিতি তৈরি হবে।”
তবে বড় ধরনের প্রভাব আরও পরে পড়তে শুরু করবে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘‘গ্রীষ্মের গরম আবহাওয়া আমাদের কাজে সাহায্য করবে। কারণ, গ্রীষ্মে সংক্রমণ বিস্তারের গতি কম থাকে।”
“তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে আগামী বছর শরৎ বা শীতের আগে অনেক বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া। শরতের আগেই সব টিকাদান প্রকল্পের কাজ শেষ করা।

Exit mobile version