অন্ধকার গুমোট মেঘ সেই সকালবেলা থেকে। সূর্যিমামার দেখাটি পর্যন্ত নেই। মেঘগুলো ধূসর হতে হতে আকাশকে ঢেকে ফেলেছে। এরপর দমকা হাওয়া নিয়ে বৃষ্টি নামলো। অনেকদিন পর ঠাণ্ড ঠাণ্ডা লাগছে।স্কুলের লম্বা ছুটি। কিন্তু এ ছুটিতে বাইরে যাওয়া হচ্ছে না।বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলছে। তাই নিরাপদে ঘরে থাকা।
বাড়ির পেছনের উঠোনে দোলনায় দুলে, স্কুটি চালিয়ে, ঈশান ও বাবু সাবরিনের সাথে খেলে সময় কাটছে নাশরাহর।
তবে আজকের মেঘলা দিনের এ আবহাওয়ায় তেমন খেলা হচ্ছে না। দমকা বাতাসে দোলনার পাশের আমগাছ থেকে ঝুর ঝুর কিছু কাঁচা আম পড়েছে। মরিচ লবণ মাখিয়ে আমগুলো বাবু সাবরিন ও শারমিনকে খেতে দিল সে।একটা সাদা বিড়াল হেঁটে গেছে দেয়ালের উপরে।
সকালের নাস্তা সেরে জানালা দিয়ে তাকাতেই নাশরাহ্ দেখে তুমুল বৃষ্টিতে একটা চড়ুইছানা গাছের উপর থেকে পড়ে পানিতে ভাসছে।ছোট্ট পাখিটার ডানায় আঘাত লেগেছে। মাকে বলে নাশরাহ ওটার শুশ্রূষা আরম্ভ করলো। মধু খেতে দিল। হালকা কুসুম গরম পানিও পান করালো। তারপর সেভলন ক্রিমও লাগালো ডানায়। মোবাইলে নানা পাখির ডাক শোনালো। একটা চেয়ার নিয়ে সে বসে আছে পাখিটির সামনে।আর ছোট্ট টেবিলে তোয়ালে জড়িয়ে আরাম করে বসতে দিল পাখিটাকে।
ধীরে ধীরে বৃষ্টি পড়া কমে এলো। ছানাটাও বেশ আরাম বোধ করছিল।নাশরাহ্ পাখিটাকে টাঙানো রশির ওপরে দাঁড়াতে সাহায্য করলো। ছোট্ট পাখিটা অস্ফুটস্বরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছিল। আস্তে আস্তে আকাশটা ফরসা হলে পাখি টাকে তার মা এসে নিয়ে গেল। যাওয়ার সময় কিচিরমিচির করে যেন বলে যাচ্ছিলো আসি বন্ধু, ধন্যবাদ।
বন্ধুরা, তোমরাও সবসময় বিপদে পড়া মানুষকে এমনি করেই সাহায্য করো। আর মনে রেখো যারা খোদার সমস্ত সৃষ্টিকে ভালোবাসে খোদাও তাদের ভালোবাসেন।