Site icon Shaili Tv

নারীজন্মের শোধ

আজ আমার নিস্প্রাণ দেহটাকে নেয়া হচ্ছে
মেডিকেল রিসার্চ ল্যাবে
কোথায় কি আছে পরীক্ষা হবে তার।
যেমনটি তোমরা করেছো আমারি জীবদ্দশায়
স্বপ্নের প্রতিটি ফসল উপড়ে ছেনীর আঘাতে
ছেটেছো বার বার।
মর্মঘাতি করুণ বেহাগের সুর বেজেছে
দিনান্তে দিন।
দেহে স্পন্দন ছিলো জীবন ছিলনা
শাসনের বেড়ীতে বেঁধেছিলে চলা আর বলার ক্ষমতা।
ক্ষমতার কাছে নয় আটকে ছিলাম বিবেকের কাছে
কার কাছে নির্ভরতা?
সমাজের বৈষম্য বারবার কেড়ে নিয়েছে সবকিছু।
বলার ভাষা ছিল চলার পথ ছিল
ছিলনা বিচরনের দুঃসাহস।
মাতাল শরীরে ঢেউ খেলতে যে জোসনা
তাও ঢেকে যেতো অমাবশ্যার অন্ধকার নৃত্যে।
কিছু মানুষরুপি জানোয়ারের লোলুপ দৃষ্টির কাছে
হেরে গেছি বার বার
এই শরীর ছুঁয়ে নিয়েছে বিকৃত সুখ।
তবু বার বার দিতে হয়েছে সতিত্বের পরীক্ষা।
কেন বাচঁবো শৃংখলিত এমন চেতনায়?
শ্রোতস্বিনী নদীর মতো বয়ে গিয়ে
থেমে গেছি রক্ত চক্ষুর চাহনিতে।
যে বসুন্ধরায় পুষেছি গৌরবের মাহাত্ব
তা কতটুকু ছিল আমার?
আমার নিজের বলেতো কোন দেশ বাড়ী ঘর ছিলনা
কেবলি পরগাছার মতো একেবেঁকে ছুঁয়েছি
বৃক্ষের ডালপালা।
সকল শৃংখলা ছুড়ে ফেলে
মুক্ত পাখির মতো খুঁজেছি জীবনের সমতা
মিথ্যে মরিচিকায় হোচট খেয়েছি বারবার।
গোছানো ঘরের অঙ্গন কতটুকু আমার?
যে আঙ্গিনায় হাঁটি হাঁটি পায়ে পরে গিয়ে আবার
দাড়িয়েছি হাঁটতে, পার করে আসা সোনালী কৈশরের
শুধু স্মুতিটুকুতেই আমার অধিকার।
শ্রমিকের যেমন অধিকার নেই তার হাতে গড়া অট্রালিকার
নারীর ও তেমনি নিজশ্বতা বলে কিছু নেই।
মানুষের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে যায়
শ্মশান বা গোরস্হানে
সেখানেও নাকি লাশ খুড়ে বের করা হয় কিছুদিন পরপর।
তাহলে আমার ঠিকানা কোথায়?
আমার মৃত্যুর পর নিথর দেহটাকে রেখে এসো
কোন মেডিকেলের লাশ কাটা ঘরে।
সমাজের নিষ্ঠুরতা বার বার কেটে রক্তাক্ত করেছে
হৃদয় টাকে।
ওরা না হয় নির্জীব শরীর কেটে দেখবে
কি যন্ত্রনা বয়ে গেছি এই জনমে।
কারো কাছে আর কোন প্রত্যাশা নেই
প্রয়োজন নেই আত্মসুদ্ধির জন্য কোন ধর্মের বিধান।
নারী জন্মের এই আমার চরম প্রতিশোধ।

Exit mobile version