পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, দলীয় নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসামিশ্রিত আন্তরিক সম্বোধনে ‘মুজিব ভাই’, ১৯৬৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে প্রথম ৬ দফা ঘোষণা করার পর চট্টল শার্দুল এমএ আজিজ তাঁকে নতুন এক উপাধিতে ভূষিত করলেন। সেদিন থেকে মুজিব ভাই হয়ে গেলেন ‘বঙ্গশার্দুল’ শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮-তাঁর বঙ্গশার্দুল লকব টিকে রইলো দু’বছর। আটষট্টিতে যখন তিনি আগরতলা মামলার প্রহসনমূলক বিচারে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় শোনার জন্য উৎকর্ণ হয়ে আছেন, সেই সময়ে ঢাকা কলেজের এক ছাত্র, তাঁর পুত্র শেখ কামালের সহপাঠী রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক বঙ্গশার্দুল শেখ মুজিবের জন্য নতুন এক উপাধি উদ্ভাবন করলেন। সেই উপাধি ‘বঙ্গবন্ধু’। শেখ কামাল ও মুশতাক যৌথভাবে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকা- তুলে ধরার জন্য ‘প্রতিধ্বনি’ নামে একটি বুলেটিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই বুলেটিনেরই নভেম্বর সংখ্যায় রেজাউল হক মুশতাক “সারথী” ছদ্ম পরিচয়ে ‘আজব দেশ’ নামে লেখা এক রাজনৈতিক প্রবন্ধে শেখ মুজিবের নামের আগে বঙ্গশার্দুল না লিখে ‘বঙ্গবন্ধু’ বিশেষণটি প্রয়োগ করেন। মুশতাক বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিলেন, ৬ দফা আন্দোলন ও আগরতলা মামলা থেকে শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা যেখানে বাড়তে বাড়তে আকাশছোঁয়া উচ্চতায় উপনীত হচ্ছিলো, তাতে বঙ্গশার্দুল উপাধি তাঁকে ঠিক ধারণ করতে পারছিলোনা। এমন কোন যুৎসই উপাধি উদ্ভাবন করা দরকার, যে উপাধি নতুন পরিস্থিতিতে বহুগুণ বর্ধিত শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা ধারণ করতে পারে। এক বছর পর যখন উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে আইয়ুবের তখ্তে তাউস তাসের ঘরের মত উড়ে গেল এবং শেখ মুজিবুর রহমান এক মহানায়ক, মহাবীরের ন্যায় কারগার থেকে মুক্তিলাভ করে বেরিয়ে আসলেন বাইরে; সেই পরিস্থিতিতে ’৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) তাঁর সম্মানে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমদ শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করলেন। সেদিন থেকে শেখ মুজিব হয়ে গেলেন ‘বঙ্গবন্ধু’।
শেখ মুজিবের জন্য যুৎই
এবার শেখ মুজিবের জন্য রেজাউল হক মুশতাকের উদ্ভাবিত খেতাব নিয়ে আলোচনা করা যাক। বঙ্গ শব্দটিকে কমন রেখে তার সঙ্গে দু’অক্ষরের এমন একটি সাধারণ, অটেপৌরে শব্দ তিনি জুড়ে দিলেন, সেটাই হয়ে গেল অসাধারণ, অতুলনীয়, অমোঘ এক খেতাব। ‘বঙ্গবন্ধু’ এই শব্দবন্ধ কত সহজ, অথচ কত গভীর, গম্ভীর এবং কত ভারি। মানুষের হৃদয়রাজ্যে প্রবেশের রূপকথার সোনার কাঠি রূপার কাঠি, মানুষের মন জয় করার এক ব্রহ্মাস্ত্র। এখানে রেজাউল হক মুশতাক অনন্য। সকল খেতাবকে টেক্কা দিয়ে তাঁর ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে গেলো এক শাশ্বত, চিরকালীন খেতাব। ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দের মধ্যে যে দ্যোতনা, আর কোন বিকল্প শব্দ দিয়ে সেই ব্যঞ্জনা আনা যেতনা। আমার মনে হয়, খেতাব চয়ন করার সময় মুশতাক সাহেব এ বিষয়টাকেও হয়তো মনে রেখেছিলেন যে, খেতাবটি হতে হবে ‘মানবিক’, ‘দৈনন্দিন’, ‘ঘরোয়া’, যার মধ্য দিয়ে বাংলার সাধারণ মানুষের মহৎ আবেগ, হৃদয়ানুভূতি, কল্পনা, আকাক্সক্ষা আত্মসাৎ করে অমরত্বের দাবিদার হবে। শেখ মুজিব, তাঁর সৃষ্টি বাংলাদেশ এবং তাঁর লকব ‘বঙ্গবন্ধু’-এসব অমরত্বের মহিমায় উদ্ভাসিত। ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাবের সঙ্গে জনাব রেজাউল হক মুশতাকও অমর হয়ে রইলেন। যতদিন ‘বঙ্গবন্ধু’ বেঁচে থাকবেন, মুশতাক সাহেবও ততদিন বেঁচে থাকবেন তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে।
বাঙালির সঙ্কটে-সংগ্রামে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ চিরকাল সাহস ও সংকল্পের প্রেরণা জুগিয়ে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’-ই ছিলো রণাঙ্গণে মুক্তিযোদ্ধাদের রণধ্বনি।
মুশতাক সাহেবের দুর্ভাগ্য, বাঙালি জাতির পিতার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাব সৃষ্টি করে স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি যে প্রবল আবেগ ও প্রচ- গতি সঞ্চার করেছিলেন, এবং বঙ্গবন্ধু ধ্বনি উচ্চারণ করতে করতে জাতি স্বাধীনতার আলিঙ্গণে বাঁধা পড়েছিলো ’৭১-এর ২৬ মার্চ-সেজন্য ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাব উদ্ভাবকের যে কিছু কৃতিত্ব প্রাপ্য হয়, সেটা দিতে আমরা পরাক্সমুখ। এই খেতাব উদ্ভাবক হিসেবে আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতিও দোয়া হয়নি তাঁকে। রাষ্ট্র বা সরকারই তাঁকে এই স্বীকৃতি দেয়ার কথা, কিন্তু দেয়া হয়নি। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সর্বাগ্রে উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারতো। কিন্তু না, আওয়ামী লীগও নিশ্চুপ। গোটা জাতির পক্ষ থেকে তাঁকে একটা সংবর্ধনা দেয়া প্রয়োজন ছিল, সেটাও হলো না। একদিন এম এ হান্নান যে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে দিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বঙ্গবন্ধুর সরকার যদি হান্নান সাহেবের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিতো, সংসদেও প্রস্তাব পাশ করে সেটা যদি সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলা হতো, তাহলে পরে আর জিয়াউর রহমানের উদ্ভব হতো না। ‘বঙ্গবন্ধু’ আজ আমাদের জাতীয় স্লোগান, কত সহজে আমরা এই শব্দটি উচ্চারণ করছি, কিন্তু ৬৮’ সালে যে পরিস্থিতিতে মুশতাক সাহেব তাঁর প্রবন্ধে শব্দটি চয়ন করেছিলেন, সেটা সহজ তো নয়ই, রীতিমতো দুঃসাহসী, বিপজ্জনক একটা কাজ ছিলো।
বঙ্গবন্ধু’র জীবনীও প্রথম রচনা করেন জনাব রেজাউল হক মুশতাক। ১৯৭০ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু’র জীবনী বিষয়ে একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করেন। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বের হয়ে আসার পর মুশতাক সাহেব পুস্তিকাটি নিয়ে তাঁর হাতে দিলে বঙ্গবন্ধু খুশিতে এত বেশি উচ্ছ্বসিত ও আপ্লুত হয়ে উঠেছিলেন যে, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না ছাত্রলীগের ছেলেরা এত ভালো প্রকাশনা করতে পারে। কারণ তখন পর্যন্ত আকর্ষণীয়, দৃষ্টিনন্দন বই, ম্যাগাজিন, ব্যানার, লিফলেট, স্যুভেনির প্রকাশে ছাত্র ইউনিয়নেরই একচেটিয়া এখতিয়ার ছিলো। তিনি মুশতাককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এটা তোমরা বের করেছো ? মুশতাক যখন বললেন জ্বী, আমরাই বের করেছি, বঙ্গবন্ধু তখন অবাক বিস্ময়ে বলে উঠেনÑআমার ছাত্রলীগের ছেলেরা এত ভালো বই বের করতে পারে। আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না। তারপর তিনি মুশতাককে তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু’ বিশেষণের ¯্রষ্টা এবং বঙ্গবন্ধুর প্রথম জীবনীকার রেজাউল হক মুশতাকের জন্মদিন ১১ আগস্ট। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানার ভিংরোল গ্রামের মিয়া বাড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম না হলে আমরা ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাব পেতাম না।
আর একটা কথা, বঙ্গবন্ধুর দুটি উপাধির সঙ্গেই চট্টগ্রাম জড়িয়ে আছে। বঙ্গশার্দুল দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের জননেতা এমএ আজিজ আর বঙ্গবন্ধু দিলেন চট্টগ্রামেরই আরেক কৃতী সন্তান রেজাউল হক মুশতাক। তিনি তখন ঢাকার ছাত্রলীগ নেতা।
ষাটের দশককে বলা হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চূড়ান্ত বিকাশের দশক। সে সময় বিকাশমান বাঙালি জাতীয়তাবাদকে বিকশিত করার জন্য যে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা অক্লান্ত শ্রম, ত্যাগ ও কঠোর মনোবল নিয়ে সৃজনশীল কর্মকা-ের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেছিলেন। তাদের মধ্যে রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর পিতা মরহুম নুরুল হক চৌধুরী এবং মাতা মরহুমা মুসলিম আরা। গ্রামের বাড়ি আনোয়ারা হলেও তিনি চট্টগ্রাম শহরের পাথরঘাটায় ছোটবেলা থেকে জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় অতিবাহিত করেছেন। চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম হাইস্কুলে অধ্যয়নকালে ১৯৬৫ সালে তিনি ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একই সালে তিনি চট্টগ্রাম জেলার নির্বাচিত স্কুল ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সংগঠন “চট্টগ্রাম মাধ্যমিক স্কুল ছাত্র সংসদ” এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্কুলের ছাত্র অবস্থায় তিনি ১৯৬৬-৬৭ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের নির্বাহী কমিটির কনিষ্ঠতম সদস্য নির্বাচিত হন।
মুসলিম হাইস্কুল থেকে ১৯৬৭ সালে এস.এস.সি পাস করে তিনি পিতার ইচ্ছায় ও জননেতা মরহুম এমএ আজিজের অনুপ্রেরণায় ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। এখানেও লেখাপড়ার পাশাপাশি উত্তপ্ত ছাত্র আন্দোলনের ছোঁয়ায় তিনি আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার ঘটনাবলি প্রত্যক্ষভাবে কাছ থেকে দেখার সুযোগ লাভ করেন। এই সময় তৎকালীন রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যমণি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম পুত্র শেখ কামালের সাথে সহপাঠী হিসেবে তাঁর পরিচয় ঢাকা কলেজেই।
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রের ঐতিহ্যবাহী এ কলেজে ছাত্র আন্দোলনের জন্য সে সময় গুরুত্ব ছিল বহুমাত্রিক। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকা- তুলে ধরার জন্য রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ও শেখ কামালের যৌথভাবে ‘প্রতিধ্বনি’ নামে বুলেটিন প্রকাশের কথা আগেই বলা হয়েছেন। মোহাম্মদ আমিনুর রহমান সম্পাদিত এ বুলেটিনে তৎকালীন ছাত্র আন্দোলনের খবরাখবরের পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনাবলীও প্রকাশিত হতো।
ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সময় তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গণ আন্দোলন সংগঠনের পাশাপাশি ঢাকা নগরে বিভিন্ন স্কুল কলেজে কমিটি গঠনের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। উল্লেখ্য যে, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল উক্ত কমিটির ক্রীড়া সম্পাদিকা ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সহঃদপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন।
জনাব মুশতাক ৭০-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচন কার্যক্রমে ছাত্র সমাজের পক্ষে কেন্দ্রীয় প্রচার কার্যক্রমে নিজ থানা আনোয়ারা’য় নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তীতে তিনি ১৯৭২ সালে সফলতার সাথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সহ-সভাপতি ছিলেন।
অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্্রবিজ্ঞানে যথাক্রমে অনার্স ও এম.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর স্ত্রী নাজনীন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ এম.এ. পাস করেন।
ছাত্র জীবন শেষে জনাব মুশতাক ব্যবসা ও সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হন। তিনি বর্তমানে কেএন-হারবার কনসোর্টিয়াম লিমিটেড এর চেয়ারম্যান হিসেবে শিপিং, ইন্ডেটিং, আমদানী ও রপ্তানী ব্যবসার সাথে যুক্ত এবং পেশাগত ক্ষেত্রে একজন সফল ব্যবসায়ী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ-এর একজন সদস্য। তিনি কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, বার্মা, হংকং, ভারত, নেপাল প্রভৃতি দেশ সফর করেছেন। তিনি ঢাকায় চট্টগ্রামবাসীদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন ‘চট্টগ্রাম সমিতি’র কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি ১৯৯০-৯১, ১৯৯৬-৯৭, ১৯৯৮-৯৯ সালে ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির তিন তিনবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। “ঢাকার বুকে একখ- চট্টগ্রাম” তথা বহুতল বিশিষ্ট চট্টগ্রাম ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১২-২০১৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকা এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ট্রেড অর্গানাইজেশনের সাথেও জড়িত। বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম উপদেষ্টা তিনি। এছাড়াও তিনি ঢাকা কাস্টম এজেন্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্টার্ড গ্র্যাজুয়েট, চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মুসলিম এডুকেশন সোসাইটির জীবন সদস্য। এছাড়াও তিনি সমাজকল্যাণমূলক সংগঠন স্বাধীন বাংলা ফাউন্ডেশন এবং গ্রামীণ মেধা ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি আনোয়ারা থানার মেধাবী ও অস্বচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বৃত্তি প্রদানের জন্য তাঁর পিতা-মাতা’র নামানুসারে ‘নূরুল হক-মুসলিম আরা মোমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন।