Site icon Shaili Tv

ভালোবাসার জন্য চাই বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও আদর্শ / সুমি দাশ

ইদানীং একটা প্রশ্ন বারবার নিজের কাছে উঁকি দিচ্ছে, তাহলো – ভালোবাসার সংজ্ঞা কি? তার রুপ কেমন? তার পরিধি কতটা? তার স্থায়িত্বকাল কতো? এই সব কটি প্রশ্ন হচ্ছে একটা অদ্ভুত মায়াময় শব্দ “ভালোবাসা ” নিয়ে। যাকে প্রেম ও বলা যায়, কিন্তু ভাব বিনিময়ে ভালোবাসা টাই উচ্চারণ করা হয়। এটা নিয়ে যত জল্পনা কল্পনা, হাসি ঠাট্টা, রসিকতার রসে ভরপুর। কিন্তু এই “ভালোবাসা” যখন সঠিক জায়গায় প্রকাশ করেন, তারপর ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকেই যায়। মানে সত্যি কতটা ভালোবাসে। আমরা যে কাউকে ভালোবাসি বলতে পারি না, আবার পারি। যেহেতু মানুষ হিসেবে মানুষকে ভালোবাসা উচিত। কিন্তু যত সমস্যা যখন কাউকে বলি ” আমি তোমাকে ভালোবাসি “। তখন এটা কেন জানি ভাবনার জন্ম দেয়, দ্বিধার জন্ম দেয়, আবার কারো কারো মনের মধ্যে উথাল পাথাল সৃষ্টি করে। কিন্তু কেন? ভালোবাসাটা তো ক্ষেত্র বিশেষে, বিশেষ জায়গায় আপনাকে বুঝে শুনে প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে। যার যথার্থতা বুঝার মতো চেতনা শক্তি আছে সে হয়তো বুঝবে, এই ভালোবাসাটা হচ্ছে বিশাল মায়ার পরিধি বিস্তৃতির প্রকাশ মাত্র একটা শব্দ। যার ভিতরে অনেক গুণাবলি, আন্তরিকতা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও আদর্শ রয়েছে। এবার আসুন দর্শনের আড়ালে ধর্ষণ কি বা কেন? দর্শন মানে দেখা, যদিও আরও অনেক সমার্থক শব্দ রয়েছে, আর ধর্ষণ হচ্ছে জোর পূর্বক সেক্স করা। আমরা সঙ্গম বলতে বুঝি দুজনের ইচ্ছের উপর ভিত্তি করে মিলনের আত্মতৃপ্তি পাওয়া। সেটাতে জোর করা হয় না। এমন ইচ্ছের সাথে অনেকে বৈধ, অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। যাই হোক সেটা যার যার অভিরুচি। তবে এখন মানুষের মধ্যে স্বচ্ছতা কমে গেছে প্রযুক্তির সৃষ্টি নেট দুনিয়ায়। প্রেমের পরিধি ও ধরণ এখন পুরো সমাজকে কলুষিত করেছে। প্রেম এখন সেই লাইলী-মজনু, শিরিন – ফরহাদ, পার্বতী- দেবদাস এর মতো নেই। এখন প্রেম লোকচক্ষুর আড়ালে নয়, ওপেন রাস্তায়, ওপেন অন্ধকার রেস্টুরেন্টে, ওপেন গাড়িতে, পার্কে আবার হোটেলে। প্রেমে নেই ধৈর্য, নেই শ্রদ্ধা, নেই বিশ্বাস, নেই কোনো পবিত্রতা। তাহলে আমরা আজ কোথায়? শিক্ষা লজ্জা আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেম গড়া এবং ভাঙা এখন কচু পাতার উপর টলমল জলের মতো। সস্তা প্রেমের বলি হচ্ছে অসংখ্য যুবক যুবতীরা। এমনটা অবুঝ প্রেমে জড়িয়ে কেউ ঠকছে আবার কেউ ঠকাচ্ছে। সন্তান যখন এমন সম্পর্কে জড়াই তখন তার চালচলনে বোঝা যায়। তখন বাবা-মা তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে আলোচনা করা উচিত, নারীর প্রতি এবং প্রেমের প্রতি সম্মান রেখে কেমন সম্পর্ক করবে। একজন নারী যখন তার প্রেমিক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়, আর যা-ই হোক তাকে প্রেম বলা যায় না। তাহলে সে সন্তান অবশ্যই বন্ধু বা প্রেমিক নির্বাচনে ভুল করেছে। এটাই হচ্ছে সমাজে ঘটে যাওয়া অহরহ বাস্তব চিত্র। প্রেমিকের সাথে শতবার দর্শন হয়েছে, কিন্তু সেই বিশ্বাসী প্রেমিকের দ্বারা ধর্ষণ হয়ে শেষ হয়ে গেল রাজধানীর এক ছাত্রীর। বিকৃত রুচির যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার জীবন প্রদীপ অকালেই নিভে গেল। ভালোবাসার প্রতি অটল বিশ্বাসে তার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে এই পরিণতি। আমাদের দেশে তো পতিতালয়ে হাজারো পতিতা রয়েছে, যারা অর্থের বিনিময়ে স্বেচ্ছায় সঙ্গম করে। আরে তোরা তো সেখানে যেতে পারিস যদি তোদের মতো নরপশুদের নিজেকে কন্ট্রোল করার মতো ক্ষমতা না থাকে। কিন্তু কেন এভাবে পথে ঘাটে নারীদের অসম্মান এবং জীবন নিয়ে খেলা করছিস। তাও আবার ভদ্রবেশি মুখোশধারী শিক্ষিত যুবক। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাবা-মা কে সন্তানের প্রতি অধিক পরিমাণে সচেতন হতে হবে। তাদের সাথে বড় হয়েছে বলে দূরত্ব বজায় না রেখে বরং আরও কাছের হয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করে একটা সভ্য, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন জীবন গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।

Exit mobile version