Site icon Shaili Tv

কমরেড নাসিরউদ্দিন একজন ক্ষণজন্মা কীর্তিমান পুরুষ / মো. কাউসার ফারুক

চট্টগ্রামের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ও সমাজসেবক নাসিরউদ্দিন একজন ক্ষণজন্মা কীর্তিমান পুরুষ। বোয়ালখালী থানার অন্তর্গত আহলা শেখ চৌধুরী পাড়ায় পহেলা মে ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯১ সালের ১৫ ফেব্রয়ারি মাত্র ৩১ বছর বয়সে অবিবাহিত অবস্থায় হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।
এই অল্প বয়সেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সামাজিক পরিসরে যা দিয়ে গেছেন এবং যে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন তা আজ ৩২ বৎসর পরও অতি প্রাসঙ্গগিক ও আলোচিত। ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই আমাদের স্মৃতিপটে ভেসে আসে তার মায়াবী মুখখানি ও তার কর্মযজ্ঞের স্মৃতি।
আজ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আহলা চাইল্ড কেয়ার একাডেমির মাঠে পালন হচ্ছে তাহার ৩২তম মৃত্যু বার্ষিকী।
বামপন্থী রাজনীতি করার পরও সকল দল মতের মানুষের সুখ দু:খের সাথী ছিলেন মরহুম নাসির উদ্দিন। এলাকার ছেলেমেয়েদেরকে লেখাপড়ায় সহযোগিতা করার জন্য নিজের বেতনের টাকা দিয়ে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদেরকে বই খাতা কিনে দেওয়া, স্কুলের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা তার প্রতিমাসের রুটিন ওয়ার্কই ছিলো। শহর থেকে কাজ শেষ করে এসে বাইক নিয়ে পাড়ার ঘরে ঘরে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেওয়া তার নিত্যদিনের কাজই ছিল। প্রতিটি কাজে তার চারিত্রিক দৃঢ়তা, সততা এবং সকলের প্রতি সমান দরদবোধ এখনো তাকে কিংবদন্তীতুল্য করে রেখেছে। এলাকার যে কোনো রাজনৈতিক সমস্যা বা সামাজিক সমস্যা কিংবা দরিদ্রমানুষকে সাহায্য সব ধরনের কাজেই প্রথমসারির প্রথম ব্যাক্তি হিসাবে তিনিই অদ্বিতীয়।
বোয়ালখালীর অন্যতম পুরোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠান আহলা সমাজ কল্যাণ সংস্থা তাহার দান করা জমিতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। এই ক্লাব এখনো অত্র এলাকার ঐক্য ও সম্প্রীতির প্রতীক ও কেন্দ্রবিন্দু। এলাকার সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশিষ্ট শিল্পপতি জনাব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর আর্থিক সহায়তার প্রতিষ্ঠা করেন করিম গুলশানারা দাতব্য চিকিৎসালয়, সিরাজ আনোয়ারা স্কুল ( যা পরবর্তীকালে বন্ধ হয়ে যায়), আলহাজ্ব আব্দুস সোবহান কারিগরি স্কুল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টাও ছিলেন তিনি, যা আজ শতভাগ আব্দুস সোবহান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট পরিচালনা করে আসছে। দরিদ্রতর ছেলেমেয়েদেরকে বিনামূল্যে পড়ার জন্য খুলেছিলেন কোচিং সেন্টার।
এলাকার তরুণদের মধ্যে যে কোনো মতমালিন্য দেখলেই সবার অবিভাবক হয়ে নিজেই সবাইকে শাসন করে মিটিয়ে দিতেন। পাড়ার প্রতিটি পরিবারে, প্রতিটি মানুষের কাছে ছিলেন সবার আপনজন ও প্রিয়মানুষ।
নাসিরউদ্দিনের অমরত্ব আজও বয়ে বেড়াই ৩২ বছর ধরে। এই ক্ষণজন্মা প্রাণপুরুষ মরহুম নাসির উদ্দিন বেঁচে থাকবে আমাদের হৃদয়ে শত বছর।
১৫ই ফ্রেব্রুয়ারি যথাযোগ্য মর্যাদায় তাহার ৩২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করছে তাহার স্মৃতিকে ধরে রাখার মানসে গঠিত কমরেড নাসিরউদ্দিন ফাউন্ডেশন। আমি দীর্ঘ ২৫ বৎসর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলাম। পরম করুনাময় মহান আল্লাহতালা যেন তাহার সকল গুনাহ মাফ করে তাহাকে জান্নাতবাসী করেন সেই দোয়াই করি।
লেখক: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কমরেড নাসির উদ্দিন ফাউন্ডেশন।

Exit mobile version