১. বকুল অশ্রু
ঝরা বকুলের মতো
টুপটুপ করে ঝরে পরছে
আমার সহজিয়া অনুরাগ।
মানুষ, কুকুর, পাখির পায়ের ছাপ
বকুলের বুকে।
মানুষরূপী হায়েনাদের পদতলে
থেতলে মিশে গেছে মাটির সাথে।
অনন্ত বিরহকে সঙ্গী করে
বিদেয় হয় বকুল ফুল আমার সহজিয়া অনুরাগ।
নিঁখুত নিটোল স্বপ্নগুলোর স্বাক্ষী
বকুল ফুল
কত শত রঙীন সুতোর ছোট ছোট সূচে
গেথেছিলো নকশী কাথা।
অপলক চোখে তাকিয়ে ছিল
বকুল ফুল।
অপূর্ণতার আস্বাদনে বৃথাই কেটে গেল বর্ষা
অনন্ত বিরহকে সঙ্গী করে
বিস্তৃত নীলিমায় মিলিয়ে গেল বকুল ফুল
আমার সহজিয়া অনুরাগ।
শূন্যতাকে আলিঙ্গন করে বকুল গাছের নিচেই
দাড়িয়ে আছে আমার সহজিয়া অনুরাগ।
উপেক্ষার মহাকাব্যে অস্ত যায় পৃথিবীর আলো
নিসঙ্গতায় টুপটুপ করে ঝরে পরে বকুল অশ্রু
শুষ্ক চোখে নিস্তব্ধ মৌন আমার বকুল ফুল।
২. কবিতার খেলা
মাঝে মাঝে কবিতারা
শব্দের ধাঁধায় মেতে ওঠে
রুবিকস কিউবের মতো শব্দগুলো
এলোমেলো রঙ্গে হারিয়ে যায়
শব্দগুলোকে ঘুরিয়ে ঘুরি্য়ে
রঙ্গের সারিতে মেলানো দুষ্কর।
লজিকে রং যখন মিলে যায়
সেখানে প্রাণ থাকে না
কবিতা আর হয়ে ওঠে না।
মাঝে মাঝে কবিতারা
মনের ভিতর বাড়িতে লুকোচুরি খেলে
এ ঘর থেকে ও ঘরে ছুটো ছুটি
কত রকম স্বরে ডাকাডাকি
খুঁজে পাওয়া যায় না দুষ্ট শব্দগুলো।
খুঁজে খুঁজে যখন ক্লান্ত মন
শব্দের আলো ছায়া দেখা যায়
শব্দকে আর ছোঁয়া যায় না
কবিতা তাই লেখা হয় না।
মাঝে মাঝে কবিতারা
শব্দ জটের খেলায় মাতাল
পাশাপাশি উপড় নিচ জটিল অংক
সূত্র ধরে বুদ্ধি দিয়ে জট খুলে যায়
শব্দগুলো শুধুই শব্দ থেকে যায়
যেন কৃত্রিম দূরের শব্দকোষ
হিসেব কষে যুক্তি তর্কে
কবিতা কখনোই হয় না
ভালোবাসা যায় না।
৩. সহজিয়া অনুরাগ
বেশ হয়েছে তাকে হারিয়ে
খুঁজে পেলাম নির্জনতা
অনন্য এক জাদুকরি সত্তা
স্রোতের বিপরীতে অপার শক্তি
প্রোজ্জ্বল করেছে আপন অনুভূতি।
বেশ হয়েছে তাকে হারিয়ে
সময় হয়েছে ঘুরে দেখার
আপন কক্ষপথে মগ্ন হওয়ার
অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ ভুলে ছিলাম
গোলক ধাঁধায় পথ হারালাম।
বেশ হয়েছে তাকে হারিয়ে
কল্পনার রাজ্য তালা ঝুলিয়ে
বাস্তবতায় ঘর সাজিয়ে
মোহমায়া সেতো রঙ্গীন ছিল
চোখের পলকে ধূলিস্যাৎ হল।
হারিয়ে যে যাই সে কি আপন ছিল?
মাঝ দরিয়ায় ছুঁড়ে দিল।
সহজিয়া অনুরাগ আকাশের ধূসরিমায়
তুলিবন্দী হল।