সামনে আসছে কোরবানির ঈদ । আর মাত্র কিছুদিন বাকী ।মীমের মন ভালো নেই ।মীমের বাবা কোরবানির হাটে মীমের যত্নে পালানো করা ছাগল দুইটি বিক্রি করে ফেলবে ।মীমের মা ছাগলটি আবার কিছুদিন পর বাচ্চা দিবে, তবুও চোখের সামনে অনেক যত্নে বড় করা ছাগল দুইটি বিক্রি করতে মীমের মন চায় না।মীমের বাবা ও মা মীমকে বোঝায়, কয়টা টাকা রোজগারের আশায় তো ছাগল পালন করছি মা মন খারাপ করিস না।
মা ছাগল তো কয়দিন পরেই বাচ্চা দিবে, আমারা আবার নতুন ছানা আসলে যত্ন করে বড় করবো।
বাবা-মায়ের কথায় মীম রাজি হলো মীমের অনেক যত্নে পালন করা ছাগল দুইটি বিক্রির জন্য।মীম বাবার হাটে সাথে যাওয়ার বায়না ধরলো।
বাবার সাথে ছাগলের রশি ধরে বাড়ির কাছের হাটের দিকে রওনা হলো সে।মীমের এক হাতে একটা ছাগলের রশি আর এক হাতে কাঁঠাল পাতা ।প্রায় বিশ মিনিটের মধ্যে বাবা ও মেয়ে হাটে পৌঁছে গেলো।
হাটে গিয়ে একটা জায়গায় বাবা ও মেয়ে ছাগল দুইটি নিয়ে দাঁড়ালো। মীম একটু পরপর ছাগল দুইটিকে কাঁঠাল পাতা খাওয়াতে থাকে ।হাটে এত্তো এত্তো মানুষ দেখে মীম অস্থির হয়ে বাড়ি চলে যেতে চায়। মীমের বাবা মীমকে বলে, ঘন্টা খানেক পরেই চলে যাবো । আশাকরি ততক্ষণে ছাগল দুইটি বিক্রি হয়ে যাবে ।এর মধ্যেই কয়েকজন ছাগল দুইটি দেখেছে দামে মিলে নাই বলে বিক্রি হয়নি।
মীম ও মীমের বাবার ইচ্ছে ছাগল দুইটি একজনকেই বিক্রি করবে।যেমন কথা তেমন কাজ এক ভদ্র লোক ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে হাটে এসেছে দুইটি ছাগল কিনবে বলে, মীমের ছাগল দুইটি ভদ্রলোক এবং উনার ছোট ছেলের পছন্দ হয়।
দর দামে মিলে গিয়ে মীমের বাবা ওই ভদ্র লোকের কাছে ছাগল দুইটি বিক্রি করে ।মীমের দুচোখ বেয়ে জল গড়াতে থাকে।
মীমের চোখে জল দেখে ওই ভদ্র লোকের ছোট ছেলেটি মীমকে জিজ্ঞেস করে, কেন কান্না করছো? মীম বলে, ছাগল দুটিকে আমি অনেক আদর ও যত্ন করতাম তাই কষ্ট লাগছে।
মীম আবার নিজ থেকেই বলে, থাক বাবা বলছে আমাদের মা ছাগলটি আবার ছানা জন্ম দিবে । ছোট ছেলেটি মীমকে বলে আমার দাদু বাড়ি এই গ্রামে।আমরা শহরে থাকি কোরবানি দেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের সাথে দাদু বাড়ি এসেছি। শুনে মীম বলে, আমাদের বাড়ি পাশের গ্রামে।ছোট ছেলেটি মীমকে বলে, তোমরা কোরবানি দাও না?
উত্তরে মীম বলে, আমরা তো গরীব ।কোরবানি কোথা থেকে দিবো। আশেপাশের বাড়ি থেকে কেউ মাংস দিলে কোরবানির দিন মা মাংস রান্না করে।
মীমের কথা শুনে ছোট ছেলেটির মনটা খারাপ হয়ে গেলো। ছেলেটি বাবাকে বললো, বাবা কোরবানির দিন কাঁচা মাংস এবং রান্না মাংস নিয়ে মীমের বাড়ি যেতে চাই । ছেলের কথা শুনে বাবা মূহূর্তেই রাজি হয়ে গেলো। বললো ঠিক আছে তাই হবে। ভদ্রলোক যাওয়ার সময় মীমের বাবার নাম ঠিকানা নিয়ে মীমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।মীমের বাবা মীমকে বাড়ির পাশের একজনকে দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে ভদ্র লোকের বাড়ির ঠিকানা মত ছাগল দুইটি পৌঁছে দিলো ।