দুটি রাক্ষুসী চোখ আমাকে গিলে খাচ্ছে,
ক্রমশ আমি তারই শিকার হচ্ছি।
শিকারী এতই সেয়ানা যে,সে আমাকে আপাদমস্তক নিশানা করে রেখেছে।
নড়াচড়া করার সব ক্ষমতা চেটে-পুটে খেয়ে নিচ্ছে- লালা মাখা ঠোঁটে!
আমি ডানে গেলে সে, বামে গেলেও সে, সামনে পিছনে- যেদিক যায় সব দিক সে ভূমিদস্যুর মতো দখল করে রেখেছে।
আমার স্বাধীন মাটিতে কি যে জবরদখল করে সেই আমাকে পরাধীন করে রেখেছে,তার বয়ান একমাত্র সেই জানে!
ওর চোখের মানচিত্রে ও একক ক্ষমতাধর রাজা, আর আমি এখন কেবলই এক নগণ্য প্রজা।
রাক্ষুসী চোখের মেয়ে,কত কালো দীঘল মায়া ওর শান্ত,
অথচ গভীর হন্তক দুচোখে জমা করে রেখেছে, আমি তা জানি না,
আমি কেবল তার শুরুতেই হেঁটেছি,
এর শেষ কোথায়, কোন দিগন্তে সমাপ্তি,
এতসব খতিয়ান কেবলই সে জানে,
আর আমি জড়োসড়ো হয়ে তার পাটাতনে মাথা রেখে, নিদারুণভাবে খুন হয়ে যাচ্ছি!
ঐ খুনী চোখ আমাকে আসামীর মতো বেঁধে রেখেছে আমন্ত্রণের নিমন্ত্রণ কক্ষে!
আমি ক্ষুধার্ত হতে হতে এখন মন্ত্রমুগ্ধের মতো বুভুক্ষ হয়ে বসে
আছি,সে আমার আপদামস্তকে নির্ভরতা বর্ষণ করছে।
কতবার আমি পালাতে চেয়েছি,সে কি আর আমাকে ছাড়ে? ছাড়ে না
আমার বুকের বামে যেখানে হার্ট বিট করে,
ঠিক সেখানে সে মায়াবী যাদু দিয়ে তন্ত্রর – মন্ত্রর করে
থমকে দেয় নি:শ্বাসের অক্সিজেন।আমি আহত হই,
ছটফট করি সুখের স্বর্গে!
আর ঐ জলজ চোখ আমাকে ওর মধুময় জালে তুলে নেয়
তার সাত সমুদ্রের মতো গভীর চোখের অ্যকুরিয়ামে!
আহারে কপাল অমার, আমি আজ ঐ বন্য চোখেরই খেলনা হয়ে গেলাম!
ঐ মাদকী চোখে তীর- ধনুকের মতো ও রাক্ষস আমাকে এফোঁড়- ওফোঁড় করে ক্ষত- বিক্ষত
করেছে,মৌচাকের ছিদ্রের মতো সুভাসিত ফুলের মধু দিয়ে তারা ভরা রাতের আকাশ বানিয়েছে।
আমি নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে, ছায়াপথ থেকে ছায়াপথে,
গ্যালাক্সি থেকে গ্যালাক্সি অতিক্রম করেছি কেবলই ওর সুরে সুরাপিত হয়ে!
কেমন করে আমার মুক্তি হবে?কেমন করে আমি ঐ হানাদারী দুটো চোখ থেকে নিজেকে বাঁচাবো?
কবে আসবে সে সুদিন,
যেদিন আমি অন্য কারো স্বৈরচারী চোখে
পুতুলনাচের বিনি সূঁতার মতো গোপন অভিসারের সারথি হবো!