রাত্রি নিঝুম, চোখে নেই ঘুম, ছেলেটি ভেবেই সারা,
বারে বারে শোনে দরজায় কার একটানা কড়া নাড়া!
কে ডাকে এমন গভীর রাত্রে? খুলেছে কপাট যেই
দেখে সে ছেলেটি আশেপাশে তার- কেউ নেই, কেউ নেই।
কী অজানা টানে নেমে আসে পথে, হেঁটে চলে একা একা,
ঝিম পরিবেশ- ভয় নেই তবু, খাচ্ছে না ভ্যাবাচ্যাকা।
ঘুমিয়েছে গাছ, পুকুরের মাছ, অলি-গলি-গ্রাম-পাড়া
ঘুমিয়েছে ঘাস, শাদা রাজহাঁস, নেই কারো কোনো সাড়া।
ঘুমোয় নি কে কে? দেখে সে ছেলেটি, ওই শুধু চাঁদ তারা
নীল চাঁদোয়ায় ঝিলমিল করে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা।
রাত নিশ্চুপ, কী যে অপরূপ আলোর পরম্পরা,
দুধের সাগরে স্নান করে যেন স্নিগ্ধ বসুন্ধরা।
রেললাইন ধরে ধীরে ধীরে একা হেঁটে চলে উৎসুকে
উছল আবেগ উতরোল করে ছেলেটির কচি বুকে।
কিছুদূর গিয়ে চমকে ওঠে সে, থমকে দাঁড়িয়ে থাকে
চোখ দুটো করে ওলোট-পালোট সমস্ত ভাবনাকে।
দেখে-কত ছেলে রেললাইন পাশে শুয়ে আছে সারি সারি,
নেই কোনো লেপ তোষক তাদের; নেই নাকি ঘর-বাড়ি?
খোলা আকাশের নিচে কেন তারা? ভাবছে সে মনে মনে,
ভাবনার জলে সাঁতার কাটে সে ধীরে ধীরে ক্ষণে ক্ষণে।
ভাবতে ভাবতে পায় না সে কূল, বেরোয় না আর কথা
ভেসে আসে শুধু ছেলেটির কাছে রাত্রির নীরবতা।