সরকার লকডাউনের কড়া ঘোষণা দিয়েছে। অমান্য করলে শাস্তি দেয়া হবে।
এক ভদ্রলোক দুইদিন ঘরে থাকার পর, সকালে তাঁর স্ত্রীকে বললেন, গিন্নী কিছু লাগবে?
গিন্নীর সোজা উত্তর, না…. এই লকডাউন যতদিন থাকবে ততদিন তুমি ঘর থেকে বের হতে পারবে না।
ভদ্রলোক আকুতির স্বরে বললেন, আমার হঠাৎ খুব দই খেতে ইচ্ছে করছে। নিচে নেমে একটা দই নিয়ে আসি?
গিন্নি একটু উঁচু গলায় বললেন, না… দই আমি বানিয়ে দেবো!
ভদ্রলোক বললেন, তুমি বানিয়ে দিতে দিতে রাত হয়ে যাবে, আমার দই খাওয়ার ইচ্ছাটাই মরে যাবে, এটা বলে দই আনতে চলে গেলেন।
তিনতলা থেকে নেমে দেখলেন, গেটের সামনে পুলিশ টহল দিচ্ছে। কোনভাবেই যেতে পারছে না!
পুলিশ একটু সরে গেলে দোকান থেকে দই নিয়ে এলেন।
গিন্নির রাগ হলেও… কিছু বললেন না। চুপ করে রইলেন।
পরের দিন আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কিছু লাগবে? গিন্নি বললেন, না…. শুধু বের হবার বাহানা খোঁজে.. বলে রান্নাঘরে ঢুকে গেলেন।
এই ফাঁকে ভদ্রলোক বের হয়ে গেলেন। পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে একটা তরমুজ এনে গিন্নিকে দিয়ে বললেন, তোমার খুব পছন্দ তো তাই আনতে গেলাম।
গিন্নি এবারও কিছু বললেন না। মনে মনে ভাবলেন একে বেঁধে রাখার কোন একটা উপায় বের করতেই হবে।
পরেরদিন ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করার আগেই গিন্নি বলে ওঠলেন , আমার জন্য একটা মোটা দড়ি নিয়ে এসো। ভদ্রলোক মনে মনে ভাবলেন, আমার বৌ কত ভালো! আমাকে কত বোঝে! যাক আজ কৈফিয়ত ছাড়াই বাইরের থেকে ঘুরে আসা যাবে। আবার পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে কয়েক দোকান ঘুরে এসে বললেন দোকানে দড়ি পাইনি। কাল বের হলে যেখান থেকেই পাই তোমার জন্য দড়ি নিয়ে আসবো।
স্ত্রী ভাবলেন, কত চালাক! কাল আবার বের হবার জন্য কি সুন্দর বন্দোবস্ত করে রেখেছে। দাঁড়াও তোমাকে দেখাচ্ছি মজা!
স্ত্রীর মাথায় একটা বুদ্ধি এলো।
দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল।চায়ের সাথে তিন রকমের খাবারের আয়োজন করেছে গিন্নী।ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন আজ এতো খাবার যে! গিন্নী বললেন, আগে পেট ভরে খেয়ে নাও। তারপর বলছি।
ঘরের কলিংবেল বাজছে। কর্তাবাবু বললেন, এই লকডাউনে কে? গিয়ে দরজা খুলে দেখে পুলিশ!
আপনারা এখানে?
হ্যাঁ, আপনি আইন অমান্য করেছেন। নিষেধাজ্ঞার পরও লকডাউনে বের হবার কারণে আপনাকে বন্দী করা হলো। ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট কমলকান্ত বাবু!
কমলকান্ত বাবু চিৎকার করে বললেন, ওগো.. শুনছো?
তুমি কিছু বলো.. পুলিশ আমাকে থানায় ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
গিন্নী বললেন, তোমার জন্য ওখানে এলাহি বন্দোবস্ত করে রাখা আছে। সময় মতো খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম নিও। লকডাউন শেষ হলে তোমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসবো।
কর্তাবাবু দাঁতে দাঁত চেপে শেষ পর্যন্ত চলে গেলেন থানায়!