বর্ষারদিনে তুমুল বর্ষণে ডুবেছে খাল বিল পুকুর নদী
ঝর ঝর সারাদিন ঝরছে বৃষ্টি,
শ্রাবণ মাসের তান্ডবে কাঁদছে আকাশ রাত দিন,
কাঁদছে বন পাহাড়ের গিরি খাদ,
ঝর্ণাধারার নীরবে বয়ে চলা বহতা পানি।
আজ স্কুল যাওয়া বন্ধ,পড়া- লেখা বন্ধ, বন্ধ হেড স্যারের বকা- ঝকা।
ক্লাস রুমে পানির থৈ থৈ, হেড স্যার আর দপ্তরি কাকু
স্কুলের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিকে অভিশাপ দিচ্ছে।
আনসার দাদু কাঁথা মুড়ি দিয়ে চাল-ডালের কড়াই- মুড়ি খাওয়ায় ব্যস্ত,
পাশের বাড়ির বদরুল চাচা জাল- খলুই নিয়ে হেঁটে যায় ছড়ার পাড়ে,
বৃষ্টির জলে ভিজে ভিজে ধরবে ট্যাংরা,পুঁটি,চিংড়ি আর পুচকা বাটা মাছ।
মা গেছে বাড়ির পেছনের খোয়ারে হাঁসের ছানার খোঁজে,
ছানাগুলো কিচ কিচ করে পানির স্রােতে উৎসব করে ডুব দেয়,
আবার ভেসে উঠে।
মা শাড়ির আঁচলে জড়িয়ে হাঁসের ছানাকে নিরাপদ করে।
আমি চুপিচুপি বেরিয়ে যাই মহন্ত পুকুরপাড়ে।
কুলসুমিকে ডেকে নিই গোপনে।
কলা গাছের ভেলাতে চড়ে বৃষ্টিতে ভিজে
জুবুথুবু হয়ে বেরিয়ে যাই দুজন দিগন্তজোড়া জলরাশির শ্রাবণ সমুদ্রে।
ভেসে যেতে যেতে দুজন কত কথা বলি,বাতাসের বিপরীতে এলোমেলো দাঁড় টানি।
আজ কোন বাঁধা নেই, নেই কোন পাহারা,শুধু আমরা দুজন-
আমি আর কুলসুমি,প্রাণের দোসর চিরদিন!
চারিদিকে পানি আর পানি,সমুদ্রের পর সমুদ্র পেরিয়ে
ভেসে যাই দুজন – অচেনা, অকূল ভূগোলে!