১.আমার আর কোনো দোজখ নেই

তোমার চোখের আমন্ত্রণ আমাকে ঠকিয়েছে!
বিলাসী জীবন আমাকে নরকীয় অনলে পুড়িয়ে পুড়িয়ে
ছাই – ভষ্ম বানিয়েছে।
এক জীবনে এতোবার পুড়লে, পোড়াবার ভয় দেখিয়ে আর লাভ কি?

বাহাত্তার হাজার সূতার মুখে আগুনের হল্কা জ্বলছে, আমি কি তোমার হাতের একমুখী সূতার মোম নাকি?
আমার চামড়া পুড়েছে, মাংসপেশী পুড়েছে, মাংসের গভীরে হাড়- মজ্জা- সবইতো
মহা দাপটে পুড়িয়ে পুড়িয়ে নিমাই বানিয়েছো,তাহলে জাহান্নামী আগুনের ভয় দেখিয়ে আর কি লাভ হবে?
ভরা আষাঢ়- শ্রাবণেও এমন নির্মমভাবে কেন আমি পুড়ে যাচ্ছি তোমারই অহংকারী উনুনে?
এক জনমের পুরো দোজখের আগুন তোমারই করতলে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি মতো অনন্তে বয়ে যাচ্ছে!
তোমার পোষা দহনের লিকলিকে পোকারা বুকের ভেতরের
সকল আবাসন খেয়ে- দেয়ে উৎসব করে আর আমি তোমার করতলে নিক্ষেপ হই!

বেশতো যত পারো, ততই পোড়াও, আমাকে গৃহহীন করো,
জীবন- মরণ দাবা খেলার ঘোড়ার আড়াই চালে আটকে রাখো।
আমার আর কোনো দোজখ নেই, আর কোনো জীবন নেই, আর কোনো পুনরুত্থান নেই।

আছে শুধু অন্তত দহন, দহনের অবশিষ্ট নিষ্ঠুরতম দীর্ঘশ্বাস!

২. জলের অভিসার

ওগো দুরন্ত মেঘ, করজোড়ে মিনতি করি-
তোমার শ্রাবণ ধারা আমার দু’ চোখে ঝরিয়ে দাও,
কষ্টের অশ্রুজল ধুয়ে- মুছে যাক!

অশ্রুর ভারতলে আমি পিষ্ট হয়ে আছি- কৃষ্ণ কিরিচে – বহুকালব্যাপী, সমকাল -সমান্তরাল!

মুছে যাক সব লুকানো কান্না, সে যেন না দেখে, না দেখে যেন তাহারা,
দেখতে না পায় যেন আমার উত্তরসূরী ভালোবাসার সন্ন্যাসীরা!

মুক্তির প্রান্তরে আমি মুসাফির, দিকহারা কষ্টসখা তেপান্তরের চাতক পাখি।

আজ আমাকে জল দাওগো শ্রাবণী মেঘমালা, গোপনে ধুয়ে দাও,
ধুয়ে দাও জীবন যাপনের বাহান্ন তেপান্ন সূত্র খেলা।
গোপনে গোপনে দাও, সে যেন না জানে,
আমার এমন জলের অভিসার।