১. কাল বৈশাখী
বাতাসে এত মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ, ধরতে পারছি না কেন তাদের!
আমায় দেখে যেন সব লজ্জাবতীর মত নুইয়ে পড়ে।
যেন হাতের স্পর্শ তাদের ঘুম পাড়িয়ে দেয়!
কোকিলের মধুর স্বর গুলোকে যদি বাক্স বন্দি করে রাখতে পারতাম!
সারাবছর তাতে কান লাগিয়ে শুনে নিতাম বয়োস্কোপ দেখার মত।
প্রাণটা জুড়িয়ে যেত।
বালখিল্যতায় নেচে উঠত প্রাণ।
একবার ছেলেবেলাটাকে খুব ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে।
এখন চড়া রোদ পড়েছে।
সব আদর গুলো শুকিয়ে ন্যাড়া হয়ে আছে। চোখ অবনত।
কানের পর্দাগুলোতে পড়েছে ধূলোর স্তর।
তবে কি নিড়ানি দিয়ে নেড়ে দিলে আবারো সতেজ হবে?
কিংবা কালবৈশাখী। প্রবল ঝাঁকুনিতে নাড়িয়ে দেবে সব।
অধরাকে হাতের মুঠোয় এনে দেবে!
সব সুগন্ধ ডালা খুলে হুড়মুড় করে নাসিকা রন্ধ্রে ঢুকে পড়বে,
বেরিয়ে যাবে যত বন্ধ হাওয়া,
যেটা চেপে আছে মুখবন্ধ হয়ে সমস্ত বাকশক্তিকে ঢেকে।
আসুক তবে কাল বৈশাখী, তার পায়ে ভর করে,
পেড়ে নিতে পারবো সব আদুরে সুগন্ধ!
পড়ে নেব ফেলে আসা সরল শৈশবটাকে একটুখানি।
২.কাচের দেয়াল
বাড়িটা দেখছি দূর থেকেই।
অস্পষ্ট।
জানালার কাচগুলো বরাবরই ঘোলা।
যতবারই পরিস্কার করা হয়,
দুঃখগুলো বুদবুদ হয়ে জমা হতে থাকে।
পূর্ণিমাতেও কত আঁধার থাকে,
যদি না হাত নেড়ে সরিয়ে দেয়া হয়।
এ বাড়ি ওবাড়ির আবেগগুলো যাতায়াত যোগ্য নয়।
কাচের দেয়ালে আটকা পড়ে আছে।
যে যার দেয়ালে মাথা কুটে মরে।
হাত বাড়ানোর সাধ ঝরে গেছে কবেই… কোন এক গ্রহণ কালে..
৩. নির্ভরতা
স্বপ্ন দেখা ছাড়িনি,
আজো দেখে চলেছি।
তুমি যে পাশে আছো।
যতক্ষণ সাথে আছো, তা চলবেই..
দু’বেলা রোদ্দুর এনে দাও,
দাও হিমেল হাওয়া। কখনো ঝড় ঝড় বাদলের একগুচ্ছ কদমও।
বিকেলটাও তোমারই আঁকা, আবেগী হলুদ রঙে।
রাত্রি? না না, সে তোমার নয়। রাত মানে তো হারিয়ে যাওয়া।
তুমি তো বার বার আমাকেই খুঁজে দাও, ঝলমলে আলোতে,
অন্ধকার প্রকোষ্ঠ থেকে টেনে বের করে আনো।
হারাতে দাওনি কখনো।
তুমি যে আমারই ভরসার হাতখানি।