সমুদ্র-শুধুই সমুদ্র চায় তবুও তৃষ্ণা মেটেনা তার
মহাশূন্যে হা করে চেয়ে থাকে কৃষ্ণগহ্বর—
তার-আরও গ্রহ চায়-নক্ষত্র চায়-বুকের ভেতর।
মানুষের মন-মস্তিষ্ক কী কৃষ্ণগহ্বর
না কী প্রকৃতিগত ভাবে ভয়ংকর বর্বর!
মানুষ মানুষকে খায়!
মানুষের মারণাস্ত্রের মোক্ষম প্রয়োগ চায়।
ন্যায়ের বিরুদ্ধে যায় আবাস দখলে চায়,
যুদ্ধ চায়-মৃত্যু চায়
বহুত বেকায়দায় নিঃস্পাপ মুখ চায়।
নারী চায় শিশু চায় প্রজন্মের ধ্বংস চায়
এ-চাওয়ার শেষ নাই!
কীভাবে পেতেছে আসন একরোখা আগ্রাসন
বিশ্বমোড়লদের বেহুদা মদদ দ্যাখে
বাকরুদ্ধ পৃথিবীর তাবত মানুষ!
এমনও কী হয়!
মানুষ বোঝেনা কেন–মানুষ কিন্তু কোন খড়কুটো নয়!
স্বদেশের প্রেমে যারা বুঝে গেছে যুদ্ধের ভাষা
ক্ষুধার্ত মুখগুলো রক্তমাখা!
মানুষের জ্বালানো আগুনে তারা আগুনমুখা
তারা আগুন খায়–গোলা বারুদ খায়
ধূলা-মাটি-আর পাথর খায়-
খেতে খেতে খেতে পাথরও উগরাই।
ইট পাটকেল আর থুতু-র বিপরীতে
বেয়নেটের তীক্ষ্ণ ডগায় নির্ভীক বুকগুলো হয় শোকগাথা;
হাজারো নির্মমতায় ভরা-জীবন কথা!
মানুষ বোঝেনা কেন,মানুষ কিন্তু কোন খড়কুটো নয়
তুমি কী দেখনা মানুষ! তোমারই মতোন সদা বহমান
ধ্বংস আর মৃত্যুর মাঝখানে সৃষ্টির বিস্ময় পাহাড় সমান!
পৃথিবীতে নেমে আসে কত শত প্রাকৃতিক ঝড়
দাপুটে ঝঞ্ঝায় কীভাবে দোল খেয়ে বেঁচে থাকা যায়
মানুষেরা যেন তা শিখে গেছে পাখিদের কাছে।
অথবা কত্থক-নৃত্যের ভঙ্গিতে ভাঙা শাখা নিয়ে,
কীভাবে দাঁড়াতে হয় খুব শিখে গেছে !
কী ভাবে চাপানো যুদ্ধে তাদের করবে বিনাশ
মানুষের দ্বারা তো মানুষ্য বিনাশ নাই
বিধাতার বিধানে তাই রাখ বিশ্বাস।
মানুষ কী চায়-কতটা চায়-নিজেই জানেনা সে
স্বদেশের আয়েশ ছেড়ে বিদেশ দখলে চায়
সমুদ্রপৃষ্ঠ সহ মহাকাশ আরও চায়
চায় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে উচ্চশিখর
পুরো পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর সবই তার চায়
সূর্য-চন্দ্র চায়-দিবা-রাত্রি চায়-জ্যোছনা চায়
রোদ-আলো-বৃষ্টি চায়, ভেতর-বাহির চায়!
এক পৃথিবী ছেড়ে হাজার পৃথিবী চায়!
হাজার পৃথিবী নিয়ে কৃষ্ণগহ্বর
মানুষের আয়ুষ্কাল মাত্র ক-বছর!
মানুষ কিন্তু কোন খড়কুটো নয়
যেদিকেই হেঁটে যায় সেদিকেই খোলা থাকে পথ
যেখানেই খেলা করে সেখানেই অবারিত প্রান্তর।
মানুষের মনোযোগ মাটির দিকে
আমরণ আঁকড়ে থাকে নিজের শিকড়—!
[উৎসর্গঃ ফিলিস্তিনবাসী]