মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।ক্রিকেটার, রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। ইএসপিএন কর্তৃক পরিচালিত ‘ওয়ার্ল্ড ফেইম ১০০’ এ বিশ্বের সেরা ১০০ জন ক্রীড়াবিদের মধ্যে অন্যতম। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০টি উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে তিনি ৫ম বোলার। মাশরাফী সমর্থকদের কাছে “নড়াইল এক্সপ্রেস” নামে পরিচিত। তাকে ক্যাপ্টেন মাশরাফিও বলা হয়ে থাকে। তিনি ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার একজন দলপতি। তিনি ছিলেন সবার প্রিয় একজন। আজ তার ৩৮ তম জন্মবর্ষিকী। আমাদরে শৈলী টিভি অনলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে তাকে জানাই শুভেচ্ছো।
১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইল জেলায় তার জন্ম। নিজ শহর নড়াইলে তাকে ‘প্রিন্স অব হার্টস’ বলা হয়। মোর্ত্তজা বাংলাদেশের সফলতম পেস বোলারদের একজন। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই তিনি বোলিং কোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ফাস্ট বোলার অ্যান্ডি রবার্টসের নজর কেড়েছিলেন। রবার্টসের পরামর্শে মাশরাফীকে বাংলাদেশ এ-দলে নেয়া হয়। ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে। একই বছর ২৩ নভেম্বর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফীর অভিষেক হয়।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত তৃতীয় টেস্ট খেলার সময় তিনি হাঁটুতে আঘাত পান। এর ফলে তিনি প্রায় দু’বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকতে বাধ্য হন। ইংল্যন্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলায় তিনি সফলতা পান। ৬০ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পর আবার তিনি হাঁটুতে আঘাত পান। এযাত্রায় তিনি প্রায় বছরখানেক মাঠের বাইরে থাকতে বাধ্য হন। ইনজুরি যেন তার পিছুই ছাড়তে চাচ্ছে না।
২০০৪ সালে ভারতের বিরুদ্ধে খেলার সময় রাহুল দ্রাবিড়কে অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের একটি বলে আউট করে তিনি স্বরূপে ফেরার ঘোষণা দেন। এই সিরিজের একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি।
২০০৬ সালে তিনি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারী হন।
১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার চোটের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে মাশরাফীকে। ২০১৬ সালের রকেট বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় খেলায় ২ উইকেট সংগ্রহের মাধ্যমে মোট ২১৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী হিসাবে তুলে ধরেন নিজেকে।
২০০৯ সালের শুরুতে মাশরাফী অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের সহকারি ছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরেরই জুন মাসে তিনি মোহাম্মদ আশরাফুলের স্থলাভিষিক্ত হন এবং তার সহকারি হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিব আল হাসান। কিন্তু অধিনাক হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে নিজের প্রথম ম্যাচেই তাকে হাঁটুতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে। এই চোটের কারণে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুর সাথে হোম সিরিজে তিনি পুনরায় অধিনানকত্ব পান। তবে এবার তিনি শুধু একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য দায়িত্ব পান এবং এবারও তার সহকারি হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিব আল হাসান। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপেও তিনি বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৭ সালে ৬ই এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা সিরিজের শেষ টি২০ দিয়ে উনি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলা থেকে অবসর নেন। মাঠে ম্যাশ নামে পরিচিত মাশরাফী বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার যে অধিনায়ক থাকা অবস্থা অবসর নেয়।
২০২০ সালের ৬ মার্চ সফররত জিম্বাবুয়ের সাথে তৃতীয় ওডিআই ম্যাচের পর ওডিআই দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে যান। সতীর্থদের ভালোবাসায় সিক্ত এই দলনেতা ৮৮টি ওয়ানডে খেলায় নতৃত্ব দিয়ে ৫০টিতে জয় লাভ করেন।