মণীন্দ্র রায়। কবি ও প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ। কবি মণীন্দ্র রায়ের প্রতি শৈলী টিভির অনলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। তিনি ১৯১৯ সালের ৪ অক্টোবর পাবনা জেলার শীতলাই গ্রামে তার জন্ম। কলকাতা শহরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে তিনি ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে বি.এ পাশ করেন। পাবনাতে থাকাকালীন ছাত্রাবস্থাতেই তিনি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র ও চিত্রশিল্পী রথীন মৈত্র’র প্রেরণায় সাম্যবাদী ভাবধারার প্রতি আকৃষ্ট হন এবং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তিনি আদর্শিকভাবে ছিলেন প্রগতিশীল মতাদর্শে বিশ্বাসী।
অল্প বয়সেই তিনি লেখালেখির চর্চা শুরু করেন যখন তিনি স্কুলের গ-ীতে ছিলেন। ১৯৩৬ সালে সুধীন্দ্রনাথ দত্ত সম্পাদিত ‘পরিচয়’ পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়। ১৯৩৯ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ত্রিশঙ্কু প্রকাশিত হয়। ১৯৪২ সালে একচক্ষু, ১৯৪২ সালে ছায়া সহচর, ১৯৪৮ সালে সেতুবন্ধন কাব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশিত হয়। তিনি তেভাগা আন্দোলনের সাথে ছিলেন আদর্শিকভাবে সম্পৃক্ত। এ আন্দোলনের এর প্রেক্ষাপটে তিনি ইয়াসিন মিঞা নামে দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলেন। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি করেছেন সাংবাদিকতাও। তিনি সীমান্ত ও নিষ্পন্ন নামক দুটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি অমৃত ও সত্যযুগ নামে দুটি সাময়িক পত্রিকারও সম্পাদনা করেন। তার লেখা অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল কৃষ্ণচূড়া, অন্যপথ, অতিদূর আলোর রেখা, সুখের মেলাই, অমিল থেকে মিলে, ভিয়েতনাম, লেনিন, নদী ঢেউ ঝিলমিল প্রভৃতি। তিনি জামায় রক্তের দাগ, নাটকের নাম ভীষ্ম, মাথায় জড়ানো জলপাই, পল্লব আমাকে বাঁচতে দাও, আমাকে জাগতে দাও প্রভৃতি অনেকগুলি নাটকও রচনা করেন। ১৯৬৬ সালে তার দীর্ঘ কবিতা ‘মোহিনী আড়াল’ সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। ১৯৯৩ সালে তিনি ‘সনেট সমগ্র’ গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হন। কবি মণীন্দ্র রায় ২৮ আগস্ট ২০০০ সালে কোলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।