প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ববি বড়ুয়ার ‘সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অন্যান্য’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি জাতিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যতীত কোনো দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। উপহার দিয়েছেন এমন এক রাষ্ট্র, যেখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। ববি বড়ুয়া তাঁরই আদর্শে অনুপ্রাণিত এক লেখক; একজন অনুসন্ধানী এবং প্রতিবাদী চেতনার লেখক। তিনি সমাজের নানা বিষয় ধারণ করেছেন। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত মজবুত করার গুরুত্ব পেয়েছে তাঁর লেখায়। এই গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর কারাবাস, তাঁর সংগ্রামী জীবন, নারীজীবন, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় অসঙ্গতিসহ নানা বিষয় সনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন তত্ত্ব ও তথ্যের সমন্বয়ে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে গত ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম একাডেমি আয়োজিত একাডেমির মহাপরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরীর সভাপতিত্বে এ উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া। আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন সাহিত্যিক ড. আনোয়ারা আলম, শিক্ষাবিদ প্রফেসর রীতা দত্ত ও অধ্যাপক সনজীব বড়ুয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক কবি রাশেদ রউফ। অনুভূতি ব্যক্ত করেন গ্রন্থের লেখক প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ববি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের শুরুতে বৃন্দ আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন উঠোন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীবৃন্দ। উৎসবে লেখককে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন লায়ন আদর্শ কুমার বড়ুয়া, মেজর (অব.) রূপায়ন বড়ুয়া, সৌরশক্তি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অরুণ শীল, পরিচালক দীপক বড়ুয়া, বিপুল বড়ুয়া, এস এম আবদুল আজিজ, জাহাঙ্গীর মিঞা, শারুদ নিজাম, মৃণালিনী চক্রবর্তী, মিলন বনিক, এস এম মোখলেসুর রহমান, গোফরান উদ্দীন টিটু প্রমুখ। এছাড়া ছিলেন অধ্যাপক সুপ্রতিম বড়ুয়া, লেখক মুহাম্মদ মুসা খান, ডা. প্রীতি বড়ুয়া,প্রাবন্ধিক রেজাউল করিম স্বপন, বায়েজিদ মডেল স্কুলের সভাপতি মাজহারুল হক, কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ মহসীন চৌধুরী, এম. কামাল উদ্দিন, কবি কাসেম আলী রানা, সাংবাদিক প্রবীর বড়ুয়া ও আরিফ রায়হান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া বলেন, ববি বড়ুয়ার বইয়ের বিষয়বস্তুও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এ বইয়ের মাধ্যমে তিনি আমাদের অনেক কিছু উপহার দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন অন্তত একপৃষ্ঠা বই পড়া উচিত। এই অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে আমাদের মনে মানবিকবোধ জাগ্রত হবে।
ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, ববি বড়ুয়ার বইটি এক কথায় অসাধারণ। বইটির মাধ্যমে তাঁর মেধার পরিচয় পাওয়া যায়।
অধ্যক্ষ ড. আনোয়ার আলম বলেন, ববি বড়ুয়ার ভেতরে প্রতিবাদী চেতনা রয়েছে। তাঁর বইটা কলামধর্মী হলেও মনে হয় তিনি একজন গল্পকার, কবি ও সমাজসচেতন এবং দেশপ্রেমিক মানুষ, যিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন এবং ধারণ করেন। অধ্যক্ষ রীতা দত্ত বলেন, ববি বড়ুয়ার লেখায় তাঁর দেখা বিষয়-আশয়গুলি ফুটে ওঠেছে চমৎকারভাবে। তিনি আরো বলেন, লেখক হিসেবে ববি একজন মনোযোগী পাঠক। ফলে সমাজের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তাঁর নজর এড়ায়নি। সনজীব বড়ুয়া বলেন, ববি বড়ুয়ার ভেতরে শক্তি আছে। সেই শক্তির পরিচয় মেলে তার প্রকাশিত গ্রন্থে।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ববি বড়ুয়াকে চট্টগ্রাম একাডেমির স্মারক প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা দেওয়া হয়।