মোহাম্মদ মোদাব্বের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিশুসাহিত্যিক ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক। মোদাব্বের ১৯০৮ সালের ৬ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার বশিরহাট মহকুমার হাড়োয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর ১১৩ম জন্মবার্ষিকী। এইদিনে শৈলী টিভি অনলাইন পত্রিকার পক্ষ তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধাঞ্জলি।
তিনি ১৯২২ সালে স্যার আর.এন. মুখার্জী বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাস করেন। দেশ বিভাগ পূর্ব ব্রিটিশ ভারত ও পূর্ব পাকিস্তানের সাংবাদিকতা জগতে উল্লেখযোগ্য নাম মোহাম্মদ মোদাব্বের। শিশু-কিশোর সংগঠনের অগ্রপথিক, শিশুসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোহাম্মদ মোদাব্বের ছিলেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত মাসিক মুকুলের সম্পাদক মণ্ডলির সদস্য। মরহুম মোদাব্বের মৌলবী মুজিবর রহমানের ‘দি মুসলমান’ পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরবর্তীকালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ‘দি ফরর্য়োড’ পত্রিকায় যোগদান করেন। এই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ছিলেন জনাব আবুল মনসুর আহম্মেদ ও জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন জনাব তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া।
মোদাব্বের ১৯২৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও দৈনিক দ্য মুসলমান পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৩৩ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ফরওয়ার্ড পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৩৫ সালে সাপ্তাহিক মোহাম্মাদীতে যোগদান করেন। এবং ১৯৩৬ সালে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় বার্তা সম্পাদক নিযুক্ত হন। ‘বাগবান’ ছদ্মনামে এ পত্রিকার ছোটদের পাতা ‘মুকুলের মহফিল’ সম্পাদনা করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৯-এর আগস্ট মাসে কলকাতা ত্যাগ করে ঢাকায় চলে আসেন এবং স্থায়ি বসবাস করেন। ১৯৪৮ সালে দৈনিক ইত্তেহাদে যোগদান করেন। ১৯৪৯ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ঢাকায় নিজের সম্পাদনায় পাকিস্তান নামে একটি অর্ধ সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এটি ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিলো। ১৯৫১ সালের ডিসেম্বরে দৈনিক মিল্লাত প্রকাশিত হলে তিনি তার প্রধান সম্পাদক নিযুক্ত হন। এছাড়া ১৯৫৮ সালে তিনি পাকিস্তান রেডক্রস পরিচালিত মাসিক জুনিয়র রেডক্রস পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন।
শিশুসাহিত্যঃ হীরের ফুল(১৯৩০), তাকডুমাডুম(১৯৩০), মিসেস লতা সান্যাল ও আরও অনেকে (১৯৩৩), কিসসা শুনো (১৯৫০),গল্প শুনো (১৩৭১ বা), ডানপিটের দল(১৯৬২)। তাছাড়াও তাঁর উল্ল্যেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে-
আমার প্রথম লেখা (১৯৫৭), সাংবাদিকের রোজনামচা (১৯৭৭), ইতিহাস কথা কয় (১৯৮১), নজরুল ইসলাম (১৯৮২)। শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৫ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন এবং সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ১৯৮৪ সালের ২১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন এই শিশুসাহিত্যিক।