আজ ০৭ অক্টোবর যৌবনের কবি হেলাল হাফিজের ৭৩ তম জন্মদিন। শৈলী টিভি অনলাইন পত্রিকার পক্ষ থেকে কবিকে জানাই জন্মদিনের অভিবাদন।
‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। কবিতায় যৌবনকে ধারণ করে, যৌবনকে বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করেছেন যে কবি তিনি হেলাল হাফিজ।
প্রথম কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে হেলাল হাফিজ যে আলোড়ন তুলতে পেরেছেন তা এখনও ইতিহাসে বিরল। তার ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কাব্যগ্রন্থটি ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩৩টিরও বেশি সংস্করণ হয়েছে । যা এর আগে বাংলাদেশের কোনো কবিতার বইয়ের বেলায় ঘটেনি।
হেলাল হাফিজ সারা জীবনই কবিজীবন যাপন করে গেছেন। কবিতার যন্ত্রণাকে বুকে ধারণ করে চিরকুমারের জীবনে থেকেছেন। ব্যক্তি জীবনকে বৈষয়িকতা থেকে দূরে রেখেছেন। কবিতাকে ভালোবেসেছেন সবকিছুর চেয়ে বেশি। কোনো খ্যাতির পেছনে তিনি ছোটেননি, ছোটেননি কোনো প্রাপ্তির পেছনেও। কিন্তু, তিনি সবই পেয়েছেন। বলা যায়, যা পেয়েছেন তা আরও বেশিকিছু। পাঠক তাকে যে সম্মান দিয়েছেন- তা যে কোনো পুরস্কারপ্রাপ্তির চেয়ে বেশি কিছু। কবি হওয়ার মোহ তার ছিল না। ছিল কবির যন্ত্রণা, যা প্রকৃত কবি মাত্রেই থাকে। হেলাল হাফিজ সেই বিরল প্রকৃতির কবিদেরই একজন।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম খোরশেদ আলী তালুকদার আর মাতার নাম কোকিলা বেগম। ১৯৬৫ সালে নেত্রকোণা দত্ত হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোণা কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। ওই বছরই কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে তিনি তৎকালীন জাতীয় সংবাদপত্র দৈনিক পূর্বদেশে সাংবাদিকতায় যোগদান করেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের সাহিত্য সম্পাদক। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে তিনি দৈনিক দেশ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক যুগান্তরে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর প্রকাশিত তিনটি কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে- যে জলে আগুন জ্বলে (১৯৮৬), কবিতা ৭১ (বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায়, ২০১২), বেদনাকে বলেছি কেঁদোনা (২০১৯)।