ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুদের অন্তরে। আজকের শিশুরা আগামীদিনের জাতির কর্ণধার। শিশুর মধ্যে লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন। প্রতিটি শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে তাই যত্নবান হওয়া উচিত। আদর স্নেহ মমতা ভালোবাসাময় পরিবেশে বেড়ে উঠার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত। আনন্দময় পরিবেশে শিশুরা যেন বেড়ে উঠতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রত্যেকটা নাগরিকের দায়িত্ব। আনন্দময় পরিবেশ পেলে বাড়বে শিশু হেসে খেলে।
শিশুদের জন্য এ বিশ্বকে নিরাপদ করে গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। আবার অনেকের রয়েছে শিশুসুলভ মন যাঁরা শিশুদের সাথে মিশে গিয়ে একাকার হয়ে যান। শিশুদের মত করে দেখেন জগতটাকে। শিশুদের প্রতি ভালোবাসার অনুভূতি থেকে তাঁরা কাজ করেন শিশুদের নিয়ে। সেরকম কয়েকজন মহান ব্যক্তিদের গড়া শিশু-বিশ্ব এর আয়োজনে গত ২৬ মে অনুষ্ঠিত হলো রবীন্দ্র নজরুল জয়ন্তী। চট্টগ্রাম মোমিন রোডের অন্তরা ইকুইটি ভবনের চতুর্থ ফ্লোরের কার্যালয়ে খ্যাতিমান বাচিকশিল্পী আয়েশা হক শিমুর চমৎকার উপস্থাপনায় উঠোন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিশু কিশোর বাচিকশিল্পীদের অপূর্ব বৃন্দ আবৃত্তির পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আয়েশা হক শিমু ম্যাডামের উপস্থাপনা মানে অনুষ্ঠানের আলাদা একটা প্রাণ সঞ্চার হওয়া এবারো তার ব্যতিক্রম হয় নি। অপূর্ব কথামালা এবং ফাঁকে ফাঁকে রবীন্দ্র নজরুলের কবিতা আবৃত্তি সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়। তাঁর উপস্থাপনা দেখে আমার বলতে ইচ্ছে হয়, ‘তুমি কেমন করে গান করহে গুণী আমি অবাক হয়ে শুনি কেবল শুনি।’ স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত খ্যাতিমান সাহিত্যিক রাশেদ রউফ। তিনি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল বাংলা সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন তাঁদের সৃষ্টিকে আমাদের জীবনে ধারণ করে পথ চলতে হবে। এরপর উঠোন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিণত বয়সের বাচিকশিল্পীদের পরিবেশনায় বৃন্দ আবৃত্তি নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ। উপস্থিত সকলকে যেন স্বপ্নের জগতে নিয়ে গেল। সুদক্ষ সংগঠক এবং সমাজসেবক মোঃ মাজহারুল হকের শুভেচ্ছা বক্তব্য শিশুদের নিয়ে কাজ করার প্রত্যয়। এরপর শুরু হয় বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী আইরিন সাহার কন্ঠে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশনা। খালি গলায় এ বয়সেও চমৎকার গাইলেন। মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে দিলেন প্রতিটি গানের মাধ্যমে। বেশ কয়েকটি গান তিনি পরিবেশন করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তরুণ কান্তি বড়ুয়া। বীরপুরুষ কবিতাটি আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী শামীমা আক্তার। সমাপনী বক্তব্য রাখেন শিশু-বিশ্বের সভাপতি প্রফেসর ড. প্রণব কুমার চৌধুরী। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথের ৩৮ বছর পরে জন্ম হলেও রবীন্দ্র ধারার সম্পূর্ণ বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র ধারার সাহিত্য রচনা করে মানুষের ভালোবাসা লাভ করেছিলেন। বক্তব্যের মাঝখানে উপস্থিত দর্শকদের অনুরোধে তিনি রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানে আইরিন সাহাকে সম্মাননা উপহার দিয়ে সম্মান জানানো হয়।