আরে ইরা তোমাকে না কতবার বলেছি শাড়ি ছাড়া এসব সালোয়ার কামিজ কিংবা টপস পরবে না।কপালে লাল টিপ, সিঁথিতে সিঁদুর, হাতে শাখা পলা পরবে। আর শোন চাকরির জন্য এপ্লাই করেছো কেন? তোমাকে না বিয়ের পড়ে বলেছি চাকরি করা যাবে না। থাকতে ইচ্ছে করছে তো আমার সাথে? এসব মানতে না পারলে চলে যেতে পারো। আমি হাসিমুখে শান্তর সব কথা মেনে নিলাম। নয়টা বছর তাই করে আসছি।বিয়ে -সংসার এসব আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের কাছে ছেলেখেলা নয়। বাবা মার সম্মানের কথা ভেবে এখনো স্যাক্রিফাইস করে মানিয়ে চলছি। কিন্তু জীবনটা যে এতটাই মূল্যহীন হয়ে পড়বে তা জানা ছিল না।যে মানুষটাকে ভালোবেসে তার হাত ধরেছিলাম সেই মানুষটাই যে আজ এতটাই অচেনা হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি।
একটা সময় ছিল যখন শান্ত আমায় বলেছিল-ইরা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তোমাকে কখনো আমি কষ্ট দিবো না। তোমার সব ইচ্ছে, স্বপ্ন আমি পূরণ করার চেষ্টা করবো। আর এখন প্রতিনিয়ত আমায় বলে স্যাক্রিফাইস করতে জানো না। বিয়ের আগে কত কথাই বলেছি সবটা যে করতে পারবো তার কোনো মানে নেই। তাছাড়া তোমাকে ভালোবাসি বলেই বিয়ে করেছি। আর তুমি আমার জন্য এইটুকু করতে পারছো না?
আমি কখনোই বলিনি যে আমার দামি গাড়ি,বাড়ি,শাড়ি, চুড়ি লাগবে। চেয়েছিলাম শুধু আমার ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে পূরণ করার লড়াইয়ে আমার পাশে থাকবে। কিন্তু তুমি তা না করে পাঁচ শব্দের আবরণে মোড়ানো”স্যাক্রিফাইস”শব্দটা আমার উপর এমনভাবে চাপিয়ে দিলে তা থেকে চাইলেও কখনোই আমি বেরিয়ে আসতে পারছি না। নয়টা বছর স্যাক্রিফাইস করতে করতে মানিয়ে নিয়েচি নিজেকে। তাই না মরেও মরার মতন বেঁচে আছি।আমার এই স্যাক্রিফাইসের জন্য তোমার মুখের হাসিটা দেখলে নিজের কাছে নিজেকে অনেক বড় মনে হয়। ভাবি তখন যাক আমার স্যাক্রিফাইসের মধ্য দিয়েই তোমার যখন আনন্দ তাহলে সেটাই থাক। এ জীবনে যা পায়নি তা নিয়ে আর আফসোস করি না। এ জীবনে স্যাক্রিফাইসটা করছি বলেই এখনো সবার কাছে ভালো মেয়ে, স্বামীর কাছে ভালো বউ হয়ে আছি।