কোহিনুর আকতার। তাঁর লেখালেখির শুভ সূচনা দৈনিক আজাদীর আজমিশালীর মাধ্যমে, গত শতকের নব্বই শতকের মধ্যভাগে। ফিচার, নিবন্ধ-প্রবন্ধ এবং কবিতার মাধ্যমে তাঁর বিকাশ। সাম্প্রতিক সময়ে কবিতাতেই বেশি নিবেদিত। তাঁর কবিতা ব্যক্তিক অনুভূতির সহজ প্রকাশ। তাঁর কবিতায় অনায়াসে উঠে আসে প্রেম-অপ্রেম, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি কিংবা আনন্দ-বেদনার কথকতা। সমাজের নানা অসঙ্গতি ও মানুষের জটিল চরিত্রের সমীকরণও ছন্দের অনুরণনে ব্যক্ত হয় তাঁর কবিতায়। গভীর অভিনিবেশ নিয়ে জীবনকে দেখেন তিনি। তাঁর অন্তরের আবেগ যেন মানবভাবনার যথার্থ উৎসারণ।
তাঁর উচ্চারণ এমন :
‘ভালোবাসা মানে কাছে এসে
পাশে বসতে হবে এমন নয়।
তুমি চেনালে, তুমি শেখালে
তুমিই আমার একমাত্র অভয়।’
অথবা
‘কবিতার আবির মেখে শব্দেরা করে খেলা
সন্ধি করে বুকের তোলপাড় আর ভাবনার ডালপালা।
এইভাবেই ছুঁয়ে যাও আমায়
বিবর্ণ বিষাদ ধুয়ে যায় অবলীলায়।
শব্দে ও কবিতায় যাক না বেলা
থাক না কিছুটা সময় একান্তই তোমার আমার
কবিতার বুক থেকে তোলা।’
কঠিন কঠোর প্রয়োগে নয়, তিনি সহজিয়া ভঙ্গিতে তুলে ধরেন তাঁর মনের অব্যক্ত কথাগুলো। সহজ সাবলীলতাই তাঁর কবিতার বৈশিষ্ট্য। দুটো কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর: ‘অন্তর্জালে অন্তর জ্বলে’ ও ‘ভালবেসে ছেড়ে দেব সব অধিকার’।
কোহিনুর আকতারের জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার সরফভাটা গ্রামে। গ্রামের নৈসর্গিক সবুজে সুনিবিড় প্রকৃতিতে শৈশব এবং কৈশোর। মুক্তিযোদ্ধা পিতার ইচ্ছায় চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে’ এইচএসসি এবং বিএসসি (পাস) পাশ করার পর সংসার-জীবন। পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে প্রাণিবিদ্যায় মাস্টার্স। স্বামী সাউদার্ন মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোশাররফ হোসেন। চট্টগ্রাম একাডেমি, জেলা শিল্পকলা একাডেমি-চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যুক্ত।