” আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরে – এ বাংলায়”। মাতা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষা সর্ব মানব সত্বার শ্রদ্ধায় বস্তু। জন্মগতসূত্রে মাতৃভূমির সাথে গড়ে উঠে মানুষের হৃদয়ের মমত্ববোধ যাকে নাড়ির টানও বলা হয়। জীবন জীবিকার অনুসন্ধানে দূরে বহুদূরে অবস্থান করলেও দলমত জাতি – ধর্ম- বর্ন -নির্বিশেষে আবালবৃদ্ধরমনী সকলের মধ্যে দেশের আপামর জনসাধারণের জন্য গভীর প্রেম ও ভালোবাসার জন্ম হয়, হয়তো তাকেই বলা হয় স্বদেশ প্রেম। জননী জন্মভূমি একই সূত্রে গাঁথা এর মায়া কোনভাবে ভুলা সম্ভব নয়। জন্মের পর থেকে গ্রামের সহজ সরল মানুষের ভালোবাসা, শ্যামল মাটি, আলো-বাতাস , আবহাওয়া , ঋতুবৈচিত্র্য, প্রকৃতির অপরূপ রূপ, সবুজের সমারোহ, বন-বনানি, ফুল-ফলাদি, বৃক্ষ – গুল্ম , তরু-লতা , নদী-নালা-খাল-বিল, পুকুর- জলাশয় , পাহাড়-পর্বত, নীল সাগর, নীল আকাশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রভৃতির কাছে আমরা আমৃত্যু ঋণী। মাটিতে জীবন আবার মাটিতে মরণ তাই এ শ্যামল মাটির ঘ্রানকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা চিরন্তন। এই প্রকৃতিই মানুষের আদি শিক্ষক। তাই জন্মভূমির প্রতি মায়া-মমতা , ভালোবাসা ও মমত্ববোধ সর্বজনীন।
জীবনের চলমান গতিধারার ফেলে আসা সোনালী অতীত ধীরে ধীরে অস্পষ্ট হতে থাকে। তারপরও শৈশব স্মৃতি অম্লান হওয়ার কথা নয়। জন্মের পর কখন মা-বাবার হাত ধরে প্রথম বিহারে বা ক্যাং এ যাওয়া আসা শুরু করেছি তা হয়তো নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না। খুব মনে পরে ছোটবেলায় আমার জন্ম জনপদ এতো কোলাহলমূখর ছিল না। রাস্তাঘাটে এতো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ইলেকট্রিকের আলো সব ঘরে পৌঁছায়নি। সবুজে সবুজে আবৃত ছিল সর্বত্র এমনকি পুকুরে সাঁতার কাটার অবাধ সুযোগ ছিল। পাড়ার প্রবীন ও নবীনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া , ভ্রাতৃত্ববোধ , সম্মান ও প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসাই পরিপূর্ণ ছিল। সকলের সুখে সুখী, সকলের দুঃখে দুখী এমন সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ঐক্যতার মেলবন্ধন ছিল। গ্রামে দুটি বিহার বা ক্যাং থাকলেও কোন রকম বিবাদ বা কোন্দল ছিল না। প্রথমটা বড় ক্যাং চান্দগাঁও সার্বজনীন বিহার যা বর্তমানে চান্দগাঁও সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বিহার আর অন্যটি ছোট ক্যাং চান্দগাঁও শাক্যমুনি বিহার যা বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী পূন্যতীর্থ চান্দগাঁও সার্বজনীন শাক্যমুনি বিহার নামে পরিচিত। দুইটি বিহার হলেও আমাদের সকল গ্রামবাসীর যাওয়া আসা ছিল অবাধ কোন দলমত কোনসময় শিশুমনে উপলব্ধি করতে পারিনি। বয়োবৃদ্ধরা সর্বদাই গ্রামের মঙ্গল ও শান্তি শৃঙ্খলার প্রতি দৃষ্টি রাখতো। উদীয়মান শিক্ষার্থীদের নানামুখী সাহায্য সহযোগিতা করে গ্রামের শিক্ষার হার বাড়ানোর প্রয়াস ছিল। ঝড়ে যাওয়া বা ড্রপ-আউট শিক্ষার্থীদের বড় ক্যাং এ ছাঁটাই পেতে সকাল-সন্ধ্যায় পড়াতে দেখেছি বলে মনে পড়ে। আমাদের ছোটবেলায় বড় ক্যাংয়ের দক্ষিণে বিরাট পুকুর যা স্বচ্ছ জলের জন্য সমাদৃত ছিল। ঘরে চা বানানোর জন্য ঐ জলের বেশ কদর ছিল। ঐ পুকুরে ভিক্ষু শ্রমনেরা স্নান করতো বলে পুকুরের নাম ছিল ঠরপুকুর বা ঠাকুরের পুকুর। ঐ পুকুরের পাশ দিয়ে কদমার্ক্ত মেটোপথ ধরে একটু এগিয়ে গেলে ডানে শ্মশান দেখলে বুক কাঁপতো জনমানব শূন্য পথঘাট তারপর মনে হতো সুদীর্ঘ লম্বাপথ বামপাশে শীতমৌসুমে সবুজ ধানের শীষ বাতাসে দোল খেতো আর ডানদিকে পানিতে ভরপুর থাকতো বারোমাস , অনেকটা চলনবিলের মত যদিও তেমন প্রশস্ত নয় তারপরও পানিতে টইটুম্বুর দেখা যেত। ঠিক মধ্যখানে লম্বা খেজুর গাছ আর তালগাছের সমন্বয়ে ছোট্ট দ্বীপের মত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল তা দূর থেকে চোখে পড়তো। আরো ডানে চলমান ছিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান সড়ক। বর্ষা মৌসুমে অন্যরকম এক চিত্র , চারিদিকে পানি থৈথৈ সাথে জোয়ারের পানি গ্রামের মেটোপথ ডুবে একাকার হতো আর আমরা সমবয়সী খেলারসাথীরা পানিতে পা ডুবিয়ে আনন্দে আত্মহারা হতাম আর বড়রা কলাগাছের ভেলা বানিয়ে পানিতে ভাসতো। সে এক অভাবনীয় দৃশ্যপট ভেসে উঠছে মনোমন্দিরে। আর বসন্ত ঋতুতে চারিদিকে খরা ধুধু মাঠ বামে হেমন্তের ধানকাটা শেষ। গ্রামের প্রতি ঘরেঘরে পিঠা, পায়েস, মধুভাত, তালের পিঠা, খেজুরের রস ও নবান্ন উৎসবে আনন্দমূখর আর মাঠগুলো শুকিয়ে চৌচির শুধু লালছে বাদামী রংয়ের ৬/৮ ইঞ্চি আকৃতির নাড়াগুলো প্রচণ্ড সূর্যের তাপে অসহায়ত্ব ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতো। বিশাল মাঠে একই আকৃতির নাড়া দেখলে মনে হতো প্রাণের কৃষকরা একই মাপে কিভাবে ধানকাটা রপ্ত করেছে । যার মাপ দেখে মনে হয় কৃষকরা জ্যামিতি বিদ্যায় খুব পারদর্শী। পরিবেশ যে কত বড় বিদ্যালয় তা উপলব্ধি করছি জীবনের পলে পলে। এরপরও সারিসারি গরু-মহিষের পাল চলতো দিনের শুরু ও শেষে। গ্রামের শিশু-কিশোররা সবাই মিলেমিশে হা-ডু-ডু, বৈচি, দৌড়াদৌড়ি, ছুটাছুটিতে মশগুল থাকতো। এতো বাধা, এতো শাসন ও আতন্ক ছিল না। মা-বাবাদের মধ্যে তেমন শন্কা দেখা যেত না। যা বর্তমানে অনেকটা অবিশ্বাস্যও বটে।
এখানে উল্লেখ যে, প্রখ্যাত উপস্থাপক শ্রদ্ধেয় ফজলে লোহানীর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান “যদি কিছু মনে না কর” উপভোগ করার জন্য গ্রামের আবালবৃদ্ধরমণী (নারী,পুরুষ, শিশু কিশোর যুব) সকলে যার যার বসার পিঁড়ি নিয়ে যথাসময়ে উপস্থিত হতো বড় ক্যাংয়ের হলরুমে প্রথম গ্রামে সাদাকালো ছোট টিভি । কত ইঞ্চি ঠিক মনে পরছে না। একমাত্র টিভি বিনোদনের ভরসার জায়গা ছিল । কত আনন্দঘন পরিবেশ সকলে একসাথে বসে আনন্দ ভাগাভাগি করা এক সাথে হাসাহাসি , দুষ্টুমি , দুঃখ পাওয়া , আলোচনা , সমালোচনা করা সে এক অন্যরকম হৃদতা পারস্পরিক ও পরম্পরা ভালোবাসার বন্ধন তৈরী হতো। শাহ আব্দুল করিমের লেখা গানের কথা মনে পড়ে ,
” আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম”।
যদিও আমার এ বর্ননা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্বপ্নের মত মনে হবে তা সত্বেও আমাদের ফেলে আসা শৈশব এমনই প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে বেড়ে উঠা। সেই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ছোট ক্যাংয়ে বা বিহারে পৌঁছলে মনটা অজানা এক শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায় ও মনের গভীর প্রসন্নতায় শাক্যমুনি বুদ্ধের হাস্যেজ্জ্বল মুখমণ্ডল দর্শনে মনে শান্তি ও আনন্দের বন্যা বয়ে যেত। গ্রামের প্রত্যেকের মধ্যে শাক্যমুনি বুদ্ধের সত্যতা নিয়ে একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। সবাই মঙ্গল কিছু কাজকর্ম করার আগে যেমন পরীক্ষা, চাকুরী, অসুস্থতা, সন্তান-সন্তুতির জন্ম, ব্যবসা-বানিজ্য শুরু করার প্রাক্কালে, বিয়ে-শাদি, ঘরবাড়ী তৈরী করা, নতুন ঘরে উঠা সবকিছুর পূর্বে শাক্যমুনি বুদ্ধকে অগ্রপূজা দিয়ে বন্দনা করতো।মনোবাসনা পূর্ণের জন্য সর্বদাই শাক্যমুনি বুদ্ধের মুখমণ্ডল দর্শন করতো। অনেকের মুখে শুনেছি , শাক্যমুনি বুদ্ধের চেহারা দর্শনের মধ্য দিয়ে পূন্যার্থীদের চাওয়া পাওয়া হিসেবও মিলে যেত। আমার অনুভবে মনে পড়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগের দিন সন্ধ্যাবেলা দুই বিহারে বাতি ধুপ জ্বালিয়ে শাক্যমুনি বুদ্ধের কাছ থেকে কলমগুলো ছোঁয়ারে আনতাম আর বুদ্ধের আসন/ঘট থেকে পানি খেতাম। যদিও বয়সের অভিজ্ঞতার সেসবের কোন যুক্তি দেখিনা তারপরও বলবো ছোটবেলায় ধর্মকে অনুশীলন ও ধারণ করার জন্য সেই বিষয়গুলোরও প্রয়োজন ছিল। সেই সময় শাক্যমুনি বিহার বেশ জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। মাত্র দুই কক্ষ বিশিষ্ট মাটির দেয়াল ও টিনের চাল আর সামনে ছোট উঠান কোন বাউন্ডারি দেয়াল ছিল না। কোন বড় অনুষ্ঠান করার আগে উঠানের পরিধি বৃদ্ধির জন্য দক্ষিণপার্শ্বে ভাসমান জলজ উদ্ভিদ বা কচুরিপানা দিয়ে ভরাট করে পূনার্থীদের বসার জায়গা তৈরী করা হতো। মনে পড়ে তখন আমরা দেয়াল পত্রিকা প্রকাশে, উদ্বোধনী সংগীতে, স্বেচ্ছাসেবকে, মানপত্র পাঠে , পুষ্পাঞ্জলি প্রদানে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং উপস্থাপনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতাম। আর শেওলা দিয়ে ভরাট জায়গাগুলোতে হাঁটলে স্পন্সের মত মনে হতো। এখনো স্পষ্টতর মনে পড়ে সেই স্মৃতিময় দিনগুলি।
কালের বিবর্তনে নগরায়নের আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ আমার জন্ম জনপথ চারিদিকে সমৃদ্ধ। দুটি বিহারই আধুনিক স্থাপত্যকলার অপূর্ব নান্দনিকতায় ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। আরো সৌভাগ্য হয়েছে বর্তমানে বড় বিহারে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সাংঘিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার মহামান্য ভারপ্রাপ্ত সংঘনায়ক, বাংলাদেশ বুদ্ধবাণী প্রচার বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নোয়াপাড়া ডিগ্রী কলেজের পালি বিভাগীয় প্রধান (অবঃ) অগগমহাপন্ডিত, ধর্মাধিপতি, মহাসদ্ধর্মজ্যোতি, সদ্ধর্ম, প্রবর্ধক, প্রিয়শীলী, আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত, একাধিক স্বর্ণপদকলাভী পরম শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক বনশ্রী মহাথের এম,এ, ত্রিপিটক বিশারদ
আর অন্যদিকে ছোট বিহারে সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সুযোগ্য মাননীয় মহাসচিব সদ্ধর্মকোবিধ ও ধর্মধূত এস লোকজিৎ থেরো মহোদয়। পুজনীয় ভান্তেদের এ অবস্থান আমাদের চান্দগাঁও জনপথকে সমৃদ্ধ করেছে এবং চান্দগাঁও গ্রামবাসীর কাছেও তা অত্যন্ত গৌরবের ও আনন্দের।
যাহোক সোশ্যাল মিডিয়া ও শাক্যমুনি বিহারের কমিটির মাধ্যমে জানতে পারলাম অত্র বিহার ১৯২০ সালে ধার্মিক উপাসক স্বর্গীয় অখিল কুমার বড়ুয়া কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। আজ কালের প্রবাহে ২০২০ সালে পূণ্যময় শতবছর পালিত হচ্ছে। এহেন অনুষ্ঠানের আয়োজনে আমিও আনন্দ ও প্রীতি অনুভব করছি।
কর্মময় জীবন ও প্রবাস জীবনের নানা ব্যস্ততায় গ্রামের বিহারের সাথে তেমন যোগাযোগ রক্ষা করতে পারিনি। হঠাৎ সৌভাগ্যবশত পরম কল্যানমিত্র শ্রদ্ধেয় এস লোকজিৎ থেরো মহোদয় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমনে আসেন তখন ঊনার সাথে যোগাযোগ হলে বিহারের উন্নয়নসহ যাবতীয় বিষয়াদি ও বিহারের আজ নান্দনিক অবস্থার সৃষ্টির মূল কারিগর আর সুনিপুণ নেতৃত্বর মূলবিষয় গুলো বিস্তারিত শুনে আনন্দিত হয়েছি। আজ এই বিহারে বহু রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিসহ সুনামধন্য জাতীয় সংগঠনের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে সমাজ, জাতি ও সদ্ধর্মের সেবা ও কল্যানে কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছে। সদ্ধর্ম নিকেতন শিক্ষার মাধ্যমে শিশু কিশোরদের ধর্মীয় শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে সাথে সাথে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাষ্ট
পরিচালিত প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার কাজও নিয়মিতভাবে চলছে। প্রজন্ম কে রক্ষা করার দৃঢ় সংকল্প ও দক্ষ নেতৃত্ব গুন দিয়ে সমাজ জাতির কল্যানে অক্লান্ত শ্রম-মেধা-মনন দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন এ উদীয়মান তরুণ ও প্রাজ্ঞ সাংঘিক ব্যক্তিত্ব। যা সকলের কাছে সর্বজনস্বীকৃত , প্রশংসনীয় ও সাধুবাদযোগ্য। ঊনার এহেন কর্মদক্ষতাকে কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাই। আজ দেশ-বিদেশে, জাতীয় – আন্তজার্তিকভাবে এ বিহার এবং বিহারের গুনী সাংঘিক ব্যক্তিত্বের প্রশংসা ও পরিচয় ছড়িয়ে পড়েছে। তাও আজ আমার জন্ম জনপথকে বিশ্বের আনাচেকানাচে সকল বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর কাছে সম্মান ও মর্যাদার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। তাতে পুরো চান্দগাঁও গ্রামবাসীকে মহিমান্বিত করেছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক তা প্রত্যেকের একান্ত মনের প্রত্যাশা।
শ্রদ্ধেয় ভান্তে অতি পূন্যবান ও পারমীবান ক্ষণজন্মা সাংঘিক ব্যক্তিত্ব। ঊনী একাধারে সুদেশক, শ্রুতিমধুর কন্ঠস্বর, বলিষ্ঠ নেতৃত্ববান এবং ঊনার সদা হাস্যেজ্জ্বল মমতাময় সম্ভাষণ প্রতিটি মানুষকে আপন করে নেওয়ার এক মহাশক্তি। অত্যন্ত সরল সহজ ভাষায় ঊনী তথাগত গৌতম বুদ্ধের অমৃতময় মুখনিঃসৃত বানী ও সদ্ধর্ম প্রচার – প্রসার করে যাচ্ছেন। সত্যিই তিনি আজ সকলের মন জয় করে চলেছেন তাঁর আপন মহিমায়। তাই কবিগুরু রবি ঠাকুরের ভাষায় বলি,
” মহাবিশ্ব জীবনের তরঙ্গেতে নাচিতে নাচিতে
নির্ভয়ে ছুটিতে হবে , সত্যেরে করিয়া ধ্রুবতারা”।
দানচেতনা, সেবাধর্ম , ত্যাগের মহিমা সঠিক নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, সংঘসমাজ ও গৃহীসমাজের সমন্বয়, ঐক্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের এক মহামিলনের দৃষ্টান্ত আজকেই ঐতিহ্যবাহী পুণ্যতীর্থ চান্দগাঁও সাবর্জনীন শাক্যমুনি বিহার। পরিশেষে পুন্যময় শতবর্ষ অনুষ্ঠানের সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করছি এবং উত্তরোত্তর এ বিহারের উন্নয়ন , সম্বনয় ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।
জয়তু শাক্যমুনি বুদ্ধ
জয়তু শাক্যমুনি বিহার
জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।