সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ইসলাম ধর্মের সমস্ত পবিত্র উৎসবের মধ্যে প্রধান এবং জনপ্রিয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। দুটো ঈদ আছে আমাদের, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা।
এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর, মুসলমানদের কাছে এক অন্যরকম মাহাত্ম্য নিয়ে হাজির হয়। গত দুই বছর করোনার প্রকোপে এই ঈদ উৎসব কিছুটা ভয় ভীতিতে লুক্কায়িত ছিলো। কিন্ত এই বছর আবার ঈদ পুরানো আভিজাত্য ও সৌন্দর্য নিয়ে ফিরে এসেছে। তাই আনন্দ উদযাপনের মাত্রাও খানিকটা বেশী। পুরো এক মাস সেহরি, ইফতার আর কেনাকাটায় রেস্টুরেন্ট, বাজার -হাট, দোকান-পাট ছিলো সরগরম।
এই সময়ে দান খয়রাত, যাকাত, ফেতরা, সাথে সাথে প্রার্থনার হাতও বহুগুণ মাত্রায় বেড়ে যায়। বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঈদগাহ, সরকারি অফিস-আদালত, বাসা-বাড়ি সাজানো হচ্ছে। আর ঈদের আগে অফিস বন্ধে বাড়িতে যাওয়ার নেশায় গাড়িতে, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে মানুষের ঢল। এই সময় অস্থির কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হয় না।
ঈদ শুধু উৎসব নয়, এর তাৎপর্য বিশাল। ভ্রাতৃত্ব, বন্ধন, এবং ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল মানুষের মিলনমেলার চরম সন্ধিক্ষণ। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী (হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ) সকলের সাথে অভিমান, দূরত্ব ঘুচে যায়। নিজের মনের হিংসা, অহংকার, লোভ, কু প্রবৃত্তি বিসর্জন দিয়ে সৌহার্দ্য – সম্প্রীতির একই ছাতা তলে সকল মানুষ যেন মিলিত হয়।
আমাদের ছোটবেলার সহজ, সরল ঈদের আনন্দ থেকে এখনকার ঈদের আনন্দের মধ্যে বেশ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আম্মার হাতের সেলাই করা ফ্রক কতই না খুশী মনে পড়তাম। একটা ছোট্ট কাপড়ের টুকরাও লুকিয়ে রাখতাম, যাতে পাড়ার বন্ধুরা ঈদের আগে দেখতে না পায়। জুতো, ক্লিপ, চুড়ি সবই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা চলতো। সাধারণ জিনিস কতই না অসাধারণ আনন্দে ঝলমল। আর এখন, জমকালো শপিংমলের হাজার হাজার দামী কাপড়ের চাকচিক্যে পছন্দের কাপড় খুঁজে পাওয়া ভার। সময়ের সাথে সাথে সবকিছু আমূল বদলে গেছে। সেমাই, জর্দা, ফিরনির সাথে সাথে টেবিল ভর্তি বাহারী খাবার।
সেকাল এবং একাল… সবকালেই ঈদের আনন্দের কমতি নাই। আসুন, সবাই মিলে যে যার সাধ্যমতো প্রাণ ভরে ঈদ আনন্দ উপভোগ করি।