চোখ ওঠা একটি স্পর্শকাতর রোগ। চোখ ওঠাকে কনজাংটিভাইটিস বা রেড/পিংক আই বলে। কনজাংটিভা নামে চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা রোগ বলা হয়। চোখ ওঠার মূল কারণ হলো ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। ব্যাকটেরিয়া ও অ্যালাজির্র কারণেও চোখ ওঠে। চোখ ওঠা চোখের দিকে তাকালে কারোর চোখ ওঠে না। ভাইরাসে আক্রান্ত চোখ কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায়। কিন্তু আশপাশে অনেককেই আক্রান্ত করে বা করতে পারে। কারও হয়তো তিন দিনে ভালো হয়ে যায়, কারও আবার তিন সপ্তাহ লাগতে পারে। সেটা নিভর্র করে কী ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার উপর।
যেভাবে ছড়ায়

প্রদাহ হলে অশ্রুতে ভাইরাস ভেসে বেড়ায়। এই অশ্রু মোছার সময় এটি আমাদের হাতে এসে যায়। এর পর থেকে সেই হাত দিয়ে আমরা যা কিছুই ছুঁই না কেন, সেখানে ভাইরাস চলে আসে। যেমন কারও সঙ্গে করমর্দন, টিভি-এয়ার কন্ডিশনার রিমোর্ট, ব্যবহূত তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশের কাভার, এমনকি মুঠোফোন ইত্যাদি। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে এ সময়ে বাসায় থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
লক্ষণ

চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হওয়া, পিচুটি জমে চোখ বন্ধ হয়ে থাকা, অনেক সময় চোখের পাতা ফুলে যায়, কারও চোখের কর্ণিয়া আক্রান্ত হলে তার দৃষ্টি ঝাপসা হয় এবং আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

* চোখের পানি বা ময়লা মোছার জন্য আলাদা তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা। পরিছন্ন থাকতে হবে।

* ধুলাবালু থেকে রক্ষা পেতে কালো চশমা পরতে পারেন।
* বাহিরের পানি দিয়ে ঝাপটা দেওয়া যাবে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পানির মাধ্যমেই সংক্রমণ বেশি হয়।

* চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে সেঁক দেওয়া যেতে পারে।

* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ সেবন করা উচিত।

* হাত না ধুয়ে যখন-তখন চোখ ঘষা বা চুলকানো যাবে না।

* চোখ ওঠা বাচ্চাদের আলাদা বিছানায় শোয়াতে হবে।

কর্ণিয়ায় প্রদাহ হলে সময়মতো চিকিৎসাসেবা না নিলে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে; এমনকি কর্ণিয়া সংযোজনের মতো অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

তাই জরুরিভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক

লো-ভিশন ও কন্টাক্ট লেন্স বিশেষজ্ঞ