মানুষ তাঁর র্কীতির মাঝে আবহমানকাল ধরে বেঁচে থাকে। স্বভাবতই সুর্কীতিমান ও আদর্শবান মানুষের মৃত্যু নেই। তাঁরা অমর, তাঁদের কর্মের মধ্য দিয়ে। তেমনি একজন র্কীতিমান ব্যক্তিত্ব, ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির প্রবক্তা, চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ আনোয়ারার কৃতিসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক।
১৯৫০ এর ১১ আগষ্ট চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ভীংরোল গ্রামের মিয়া বাড়িতে রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকের জন্ম। পিতার নাম নুরুল হক চৌধুরী, পেশায় ব্যবসায়ী এবং মায়ের নাম মুসলিম আরা।
স্থানীয় স্কুলে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী স্কুল চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং এ স্কুল হতে ১৯৬৭ সালে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন। এসএসসি পাসের পর তিনি চলে আসেন ঢাকায়। ঢাকায় ভর্তি হন সে সময়কালে রাজনীতির পীঠস্থান ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ ঢাকা কলেজে। ১৯৬৯ এ ঢাকা কলেজ হতে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বি.এ এবং ১৯৭৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ছাত্র জীবনের প্রথম দিক হতে সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ৭০ এর দশকে বাঙালি জাতির নবজাগরণের সময়। সে সময়ে রাজনীতি এবং স্বাধিকার আন্দোলন সহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আন্দোলনে ঢাকা শহর তখন মিছিল ও সংগ্রামে উত্তপ্ত নগরী। পুরো দেশের রাজনৈতিক আবহাওয়া, স্বাধিকার আন্দোলন হতে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, আইয়ুবশাহীর বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৯ এর গণ-অভ্যূত্থান, ৬ দফা আন্দোলন, ১১ দফার গণজোয়ার সব কিছু মিলে দেশে এক জাগরণের সময়। আর এ নবজাগড়নের মূল হোতা ছিল ছাত্ররা। স্বাভাবিকভাবে একজন রাজনীতি অন্তপ্রাণ হিসেবে এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়া ছিল মুশতাকের জন্য অবশ্যম্ভাবী। চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুলে পড়ার সময়ে ১৯৬৫ এ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। সে সময়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক স্কুল ছাত্র সংসদেরও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এসএসসি পাস করার আগেই তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং ছাত্র আন্দোলনে তাঁর একনিষ্ঠতা এবং কাজের প্রতি একাগ্রতা এবং দায়িত্ববোধ ছাত্রদের মাঝে তাঁর আলাদা স্বতন্ত্র এক গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়। ছাত্রদের সাথে সাংগঠনিক দক্ষতার বিবেচনায় ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম সিটি ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। সত্তর দশকের ছাত্র আন্দোলনের উত্তপ্ত সময়ের দিনগুলোতে সাধারণ মানুষকে আন্দোলন সংগ্রামে উদ্বুগ্ধ করণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের প্রত্যান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে অবিরাম সাংগঠনিক কর্মকা- পরিচালনা করেন তিনি। ফলে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের বিশাল এক কর্মীবাহিনী গড়ে উঠে।
১৯৬৭ সালে ছাত্র আন্দোলনের সুতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরই ঢাকা কলেজের স্থান। ঢাকা কলেজে স্বাধীকার আন্দোলনে উত্তপ্ত ছাত্র আন্দোলনের পরশ তাঁকে আরো দক্ষ সংগঠকে পরিণত হতে সহায়তা করে। এ সময়ে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যমণি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মসূচী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাথে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরী হয়। ঢাকা কলেজে তাঁর সহপাঠী হিসেবে সাথে পান দক্ষ সংগঠক বঙ্গবন্ধুর জৈষ্ঠ্যপুত্র শেখ কামালকে। যেটি তার রাজনৈতিক অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সে সময় ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এ কলেজ ছাত্র আন্দোলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাজনৈতিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরার জন্য শেখ কামালের পরামর্শে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ হতে একটি বুলেটিন প্রকাশ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী শেখ কামাল এবং রেজাউল হক মুশতাক যৌথভাবে “প্রতিধ্বনি” নামে একটি বুলেটিন প্রকাশ করেন। মোহাম্মদ আমিনুর রহমান সম্পাদিত এ বুলেটিনে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকা- এবং ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনাবলী ও প্রকাশ করে। রেজাউল হক মুশতাক এ বুলেটিনে চার পৃষ্ঠার একটি প্রবন্ধ লিখেন। রাজনৈতিক এ প্রবন্ধে সে সময়ের রাজনৈতিক মূল ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সাথে প্রচলিত বিভিন্ন বিশেষনের পাশাপাশি “বঙ্গবন্ধু” বিশেষণটি ব্যবহার করেন। ৩রা নভেম্বর ১৯৬৮ সালে এ প্রবন্ধটি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজ শাখার প্যাডে ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধের নাম হলো “আজব দেশ” লেখকের ছদ্মনাম ছিল “সারথী”।
১৯৬৮ সালের নভেম্বর মাসের সংখ্যায় “প্রতিধ্বনি” বুলেটিনে ঐতিহাসিক ৬ দফা পূর্ণ মুদ্রনের সময় সর্বপ্রথম “বঙ্গবন্ধু” শব্দটি আনুষ্ঠানিকভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়। ছোট হেডিং এর অখ্যাত এ পত্রিকায় ব্যবহৃত “বঙ্গবন্ধু” শব্দটি ঢাকার ছাত্রমহলে সামান্য কিছু সংখ্যক ছাত্রের মাঝেই শুধু প্রকাশ পায়। ১৯৬৮, ১৯৬৯ এবং ১৯৭০ এ বাঙালি জাতির এবং জনগণের মূল স্রোতধারা একটি মোহনায় একাকার হয়ে যায় এবং শেখ মুজিবুর রহমান সে সময়কালে সে স্রোতধারার মুকুটহীন স¤্রাট। তখন প্রয়োজন হয়ে পড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সাথে একটি উপযুর্ক্ত সম্মানমূলক বিশেষণ যোগ করার।
উত্তপ্ত আন্দোলনের সে সময়ে ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্ব শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান সহ ৬৯ এর ছাত্র নেতৃত্বের সকলের নিকট “বঙ্গবন্ধু” বিশেষণটি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। “প্রতিধ্বনিতে” প্রকাশিত রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকের প্রবন্ধের “বঙ্গবন্ধু” শব্দটি পরবর্তীতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন লিফলেট, প্রচারপত্রে নিয়মিত ব্যবহৃত হতে থাকে। রাজনৈতিক মঞ্চে বক্তরাও ‘বঙ্গবন্ধু’ বিশেষণটি নিয়মিত উচ্চারণ করতে থাকে।
১৯৬৯ এর গণ অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হতে অব্যহতি পেয়ে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে অবির্ভূত হন। এসময় ১৯৬৯ এর ২২ ফেব্রুয়ারী ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে গণ-সংবর্ধনায় লাখো জনতার উপস্থিতিতে ছাত্র জনতার পক্ষ হতে তৎকালিন ছাত্রলীগের অন্যতম প্রধাননেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমদ শেখ মুজিবুর রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে “বঙ্গবন্ধু” উপধিতে ভূষিত করেন। এ সময় হতে শেখ মুজিবুর রহমানের নামের সাথে সকল প্রকার বিশেষণ বাদ দিয়ে “বঙ্গবন্ধু” নামটিই সমুজ্জল হয়ে উঠে। তখন হতেই রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক প্রবর্তিত “বঙ্গবন্ধু” উপাধিটি আমাদের হয়ে গেল। এখানেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অন্যান্য কৃতিত্ব যা রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাককে ইতিহাসে অমর করে রাখবে। যতদিন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা থাকবে ততদিন রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকের নামটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। এখানেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের স্বার্থকতা।
১৯৬৯ এর গণ-আন্দোলনের সময় তিনি ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সহদপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৭০ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনোয়ারা ও কক্সবাজার নির্বাচন পরিচালনায় ছাত্র সংসদ পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রচার কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক কর্তৃক ১৯৭০ এ সর্বপ্রথম “বঙ্গবন্ধুর” জীবনি বিষয়ে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। ২৪ পৃষ্ঠার এ পুস্তিকাটির নাম ছিল “এই দেশেতে জন্ম আমার”। পুস্তিকাটির প্রচ্ছদ করেছেন কালাম মাহমুদ। রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক লিখিত পুস্তিকাটি সম্ভবত বঙ্গবন্ধুর জীবনি বিষয়ক সর্বপ্রথম রচনা।
১৯৭১ এর ২ মার্চ ঢাকার রমনা বটমূলে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে ছাত্রনেতা আ.স.ম আব্দুর রব, শাহাজাহান সিরাজ এর সাথে রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং রমনা বটমূলের বিশাল সমাবেশের মঞ্চেও তিনি উপস্থিত ছিলেন।
মুশতাক স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম কার্যকরি সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অফিস-ইন-চার্জ এর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফ এর অধীনে ১ নং সেক্টরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রজীবনের এবং ছাত্র রাজনীতির শেষে তিনি সরাসরি রাজনীতির সাথে যুক্ত না হয়ে ব্যবসা ও সমাজসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী রাউজানের কদলপুরের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ডাঃ আবুল কাশেম চৌধুরীর কন্যা নাজনীন চৌধুরীর সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।
১৯৮৪ সালে চাকসুর সাধারণ সম্পাদক জমির চৌধুরীর মাধ্যমে তিনি ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির কার্য্যক্রমের সাথে যুক্ত হন। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে ১৯৯০-৯১, ১৯৯৬-৯৭ ও ১৯৯৮-৯৯ সালে তিনি তিন তিন বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০২-০৫ সালে দুই মেয়াদে ট্রাষ্ট্রি বোর্ডের সেক্রেটারী দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম সমিতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে চট্টগ্রাম সমিতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। যা চলমান কাজের গতিধারার অন্যতম মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত। অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা এবং চট্টগ্রামের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং ঢাকায় চট্টগ্রামবাসীর সাথে যোগাযোগ এবং চট্টগ্রামের মানুষের সম্মিলনের অন্যতম কৃতি সংগঠক রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ২০১২-১৩ সালে চট্টগ্রাম সমিতির ঢাকার সভাপতি নির্বাচিত হন। যা তাঁর প্রতি চট্টগ্রামের জনগণের ভালোবাসার উপহার এবং দায়িত্ব অর্পণ।
রাজনীতির বাইরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে তার সরব উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। সমাজ কল্যাণমূলক সংগঠন স্বাধীন বাংলা ফাউন্ডেশন এবং গ্রামীণ সেবা ফাউন্ডেশন এর তিনি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। মুশতাকের নিজ জন্মস্থান আনোয়ারায় মেধাবী ও অসচ্ছল ছাত্রছাত্রীদের মেধা বৃত্তি প্রদানের জন্য তাঁর পিতা মাতার নামানুসারে “নুরুল হক মুসলিম আরা মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট ফান্ড” প্রতিষ্ঠা করেন। এ ফান্ডের মাধ্যমে তিনি নিয়মিত জনসেবামূলক কাজ পরিচালনা করে আসছেন।
“বঙ্গবন্ধু” উপাধির প্রথম প্রস্তাবকারী হিসেবে তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম একাডেমি ৮ মে ২০১৫ সালে রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাককে সংবর্ধনা প্রদান করেন। একই সাথে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগও তাকে সংবর্ধনা প্রদান করেন। একজন অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনায় ধারক ও বাহক বাংলার স্বাধীকার আন্দোলনের সময়ে সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা শেখ কামালের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগে প্রথম “বঙ্গবন্ধু” শব্দ উপাধির প্রবক্তা, ৬৯ এর গনআন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রামের কৃতিসন্তান রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক ২০২১ এর ১৫ জুন বুধবার দিবাগত রাত ১২ টা ৪৫ মিনিটের সময় ঢাকাস্থ একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
একজন অমায়িক, বন্ধুবৎসল, সাদাসিধে ও সজ্জন ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক। তিনি চট্টগ্রাম একাডেমির কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর মত সদালাপী নিরহংকার বিনয়ী ও স্নেহবৎসল লোক এখন সমাজে বিরল। তিনি ছিলেন সমাজ সচেতন, দেশপ্রেমিক ও চট্টগ্রামের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ ছিল প্রবল। চট্টগ্রামে মানুষের জন্য চট্টগ্রামের জন্য তিনি তাঁর অবস্থান হতে কাজ করার চেষ্টা করেছেন। সত্যিকারভাবে বলতে গেলে তিনি ছিলেন্ একজন চট্টলপ্রেমি মানুষ। তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম একজন তাঁর দরদী বন্ধুকে হারালো। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।