আগের দিন সিলেটের বিপক্ষে জয়ের পর শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগে উঠেছিল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের। কিন্তু গতকাল খুলনা টাইগার্সের কাছে হেরে সে সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেল। কুমিল্লার আর একটি ম্যাচ বাকি। সে ম্যাচে জিতলে কুমিল্লার পয়েন্ট হবে ১২। অপরদিকে খুলনা এবং ঢাকার একাধিক ম্যাচ বাকি থাকলেও তারা একটি করে ম্যাচে জিতলে চলে যাবে শেষ চারে। সে ক্ষেত্রে কুমিল্লাকে বিদায় নিতে হবে রবীন লিগ পর্ব থেকে। নিজের ফর্ম হীনতার কারণে আগের ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি সাব্বির রহমান। তবে গতকাল আবার ফিরেছেন দলে। আর ফিরেই ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন সাব্বির। কিন্তু তার সে ঝড় কাজে আসলনা কুমিল্লা ওয়ালিয়র্সের। হেরে শেষ হয়ে গেল শেষ চারে যাওয়ার সম্ভাবনা। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ৩৪ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। ফলে মুশফিকের দলের শেষ চারে যাওয়ার রাস্তাটা আরো সুগম হলো। গতকাল বুধবারের প্রথম ম্যাচে ৩৪ রানে জিতেছে খুলনা। ১৮০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৮ ওভার ৪ বলে ১৪৫ রানে গুটিয়ে গেছে কুমিল্লার ইনিংস। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ভালো শুরু করেও স্কোরটাকে বড় করতে পারছিলেন না সাব্বির । স্ট্রাইক রেটও ছিল কেবল ১০০। ফলশ্রুতিতে একাদশে জায়গা হারিয়েছিলেন সাব্বির। এক ম্যাচ পর ফিরে নামলেন ওপেনিংয়ে। ৩৯ বলে দুই ছক্কা ও সাত চারে খেললেন ৬২ রানের ইনিংস। বড় দেরিতে নিজের মতো করে খেলতে পারলেন সাব্বির। খুলনার কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে কুমিল্লার ছিটকে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে খুলনা। দুই ম্যাচ পর দলে ফেরা শান্ত শুরুতে সচল রাখেন রানের চাকা। পরে শট খেলতে শুরু করেন মিরাজও। এক সময়ের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের জুটি ভাঙেন সৌম্য সরকার। পয়েন্টে সানজামুলের হাতে ধরা পড়েন শান্ত। ২৯ বলে খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৩৮ রানের ইনিংস গড়া চারটি চার ও এক ছক্কায়। এরপর ডেভিড ভিসাকে উইকেট ছেড়ে স্কুপ করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান মিরাজ । ৩৯ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে করেন ৩৯ রান। এরপর ঝড় তোলেন রুশো। ২৬ বলে পৌঁছান হাফ সেঞ্চুরিতে । শুরুতে তাকে স্ট্রাইক দিয়ে যাওয়া মুশফিকও পরে শট খেলতে শুরু করেন। দুই জনে অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে ৪৬ বলে গড়েন ৮৫ রানের জুটি। সৌম্যর করা ইনিংসের শেষ ওভারে দুই চারের সাহায্যে ১২ রান তুলে নেন রুশো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান আউট হতে পারতেন সেই ওভারের প্রথম বলে। ব্যাট ছুঁয়ে যাওয়া ক্যাচ গ্লাভসে জমিয়ে মৃদু আবেদন করেছিলেন কিপার মাহিদুল ইসলাম। কাছাকাছি সময় ব্যাট মাটি স্পর্শ করায় হয়তো বলে-ব্যাটের স্পর্শের ব্যাপারটি ঠিকমতো বুঝতে পারেননি রুশা। মুশফিক দুই চারে ১৭ বলে করেন ২৪।
বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। রবি ফ্রাইলিঙ্কের বলে শফিউল ইসলামের দারুণ ক্যাচে ফিরেন স্টিয়ান ফন সিল।
অধিনায়ক ডেভিড মালানকে দ্রুত বিদায় করেন শফিউল। টুর্নামেন্টে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারা সাব্বির সাবধানী শুরুর পর খেলতে শুরু করেন শট। দ্রুত জমে যায় ছন্দে থাকা সৌম্যর সঙ্গে তার জুটি। ফ্রাইলিঙ্ককে ওড়ানোর চেষ্টায় সৌম্য সীমানায় ধরে পড়লে ভাঙে ৫১ রানের জুটি। ইয়াসির আলীর সঙ্গে সাব্বিরের আরেকটি ভালো জুটিতে এগিয়ে যায় কুমিল্লা। দ্রুত এগোনো জুটি ভাঙে সাব্বিরের বাজে শটে। মোহাম্মদ আমিরের বলে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর বেশিদূর এগোয়নি কুমিল্লার ইনিংস। দলটি শেষ ৬ উইকেট হারায় কেবল ১৫ রানে। শেষের দিকে তিনটি উইকেট তুলে নেন ফ্রাইলিঙ্ক। ১৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। দুটি করে উইকেট নেন আমির ও শহিদুল ইসলাম। এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে খুলনা। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরেই আছে কুমিল্লা।